ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর বাজারের কাছে পাপ্পু বিশ্বাস নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পুলিশ পরিচয়ে ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বুধবার (১৩ জুলাই) ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ী পাপ্পু বিশ্বাস ভাঙ্গা থানার এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সোর্স মেহেদী হাসান মৃদুল মুন্সীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম দস্তগীর আহমেদ বুধবার বিকেলেই অভিযুক্ত পুলিশ এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সোর্স মেহেদী হাসান মৃদুলকে আটক করে। তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আটককৃত দুই জন। পরে ভাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এএসআই বাবুল হোসেনের ভাড়া বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত স্বর্ণ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সোর্সকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার কামঠানা গ্রামের অজিত বিশ্বাসের ছেলে পাপ্পু বিশ্বাসের যশোর সদর মার্কেটে পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের দোকান রয়েছে। সে গত ৯ জুলাই রাতে ভাঙ্গা বাজারের এক স্বর্ণের ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ১১টি স্বর্ণের বার বা ১১০ ভরি স্বর্ণ ক্রয় করে। রাত অনুমানিক ১টার সময়ে স্বর্ণ পকেটে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময়ে তার পথ গতিরোধ করে ভাঙ্গা থানার এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সোর্স মেহেদী হাসান মৃদুল। এ সময় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে পুলিশ পরিচয়ে তার স্বর্ণ অবৈধ বলে সব স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ী নিজেকে লাইসেন্সধারী বৈধ স্বর্ণের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেয় এবং বৈধ ১১টি স্বর্ণের বার আছে বলে স্বীকার করেন। পরে এএসআই বাবুল হোসেন ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ৭টি বার ফেরত দিয়ে ৪টি বার অর্থাৎ ৪০ ভরি পরিমাণ স্বর্ণ নিয়ে যায়। এবং তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। স্বর্ণ ব্যবসায়ী সে সময় আতঙ্কে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী তার আত্মীয় স্বজনদের নিকট পরামর্শ গ্রহণ করে গত মঙ্গলবার রাতে ভাঙ্গা থানার ওসির নিকট বিস্তারিত জানায়। তখন ওসি এএসআই বাবুলকে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। পরে বাবুলের সোর্স মেহেদীকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা দুজনেই অকপটে সব স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি সেলিম রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সোর্স মেহেদী হাসানকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ছিনতাইকৃত ৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদন্নোতিপ্রাপ্ত) মো. জামাল পাশা বলেন, এরইমধ্যে ওই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হবে। আইনানুযায়ী পরবর্তী সব পদক্ষেপ নেয়া হবে। কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায় তো গোটা বাহিনী নিবে না। যে অপরাধ করবে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
জেডআই/
Leave a reply