হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ৫২বছর পর কুমিল্লায় পৈতৃক পরিচয় ও স্বজনদের খুঁজে পেলেন এক নারী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের এমন মিলন দেখে খুশি এলাকাবাসীও।
স্বজনদের কাছে ফিরে আসা ওই নারীকে একনজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের গ্রামের লোকজন।
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বাগমারা গ্রামের মেয়ে খোরশেদা বেগম। এখন তার বয়স ষাটোর্ধ্ব। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে বাবা আবদুল মালেক সংসারের অভাব অনটনের কারণে ৬ বছর বয়সী শিশু কন্যা খোরশেদাকে গৃহপরিচারিকার কাজে লাগিয়ে দেন চান্দিনা উপজেলার এক পরিচিতের বাসায়। ওই সময় কথা ছিল খোরশেদা ওই পরিবারের শিশুদের দেখশোনা ও খেলার সঙ্গী হিসেবে থাকবেন। তবে শিশু খোরশেদা তার গৃহকর্তীর দেয়া সব কাজ করেও সইতে হতো অমানবিক নির্যাতন।
এক সময় ওই পরিবারটি চাকরির সুবাদে কুমিল্লার চান্দিনা ছেড়ে চলে যায় পাবনা জেলায়। সাথে নিয়ে যায় শিশু খোরশেদাকেও। একদিন পানি আনতে গিয়ে একটি মাটির কলস ভাঙার অভিযোগে ওই বাসার গৃহকর্তী নির্যাতন শুরু করে শিশু খোরশেদার উপর। পরে ঘর থেকেও বের করে দেয়া হয় তাকে।
এরপর শিশু খোরশেদা রাগে-ক্ষোভে আর ফিরে যায়নি সেখানে। বাড়ি-ঘরের ঠিকানা না জানায় বেরিয়ে পড়েন অজানার উদ্দেশে। না খেয়ে কয়েকদিন রাস্তায় রাস্তায় হেটে হাজির হন মানিকগঞ্জে। আর সেখানেই একটি দরিদ্র পরিবারে ঠাঁই হয় তার।
ষাটোর্ধ্ব খোরশেদার এখন চার মেয়ে ও এক ছেলের মা। স্বামী মারা গেছে বহু বছর আগে। শেষ বয়সে এসেও খুঁজে ফিরছিলেন হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের। তবে বাবার নাম আর কুমিল্লার চান্দিনা ছাড়া কিছুই বলতে পারতেন না তিনি। প্রায় ৫২ বছরে অনেক খুঁজেও স্বজনদের না পেয়ে হাল ছাড়েননি তিনি। গেলো ঈদুল আজহার পরদিন একমাত্র সন্তানকে নিয়ে আবারও বেরিয়ে পড়েন তার স্বজন ও বাবার বাড়ির খোঁজে।
অবশেষে চান্দিনার বাগমারা গ্রামে পেয়েও যান স্বজনদের। ৫০ বছরের অধিক সময় পরে আপনজনদের কাছে পেয়ে খুশি তার পরিববারে লোকজন।
/এনএএস
Leave a reply