স্বর্ণ কেন খায় মানুষ, পুষ্টিগুণ আছে?

|

স্বর্ণ, এই ধাতুটির নাম শুনলেই কল্পিত দৃশ্যপটে গহনা কিংবা সাজ সজ্জার ছবিই চলে আসে। তবে খাবার প্লেটে স্বর্ণের বার্গার, আইসক্রিম, চকলেট কিংবা, স্টেক দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সম্প্রতি দেশের একটি তারকা হোটেল স্বর্ণের আইসক্রিম বিক্রি করে বেশ আলোচনায়। লাখ টাকা দামের সেই আইসক্রিম খাওয়ার ফরমায়েশ দুদিনেই হয় ওভার বুকড। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আসলেই কি খাবার হিসেবে এই ধাতুর ব্যবহার হয়? হলে তার পুষ্টিগুণই বা কতটুকু?

এত আয়েশ করে স্বর্ণের খাবার যারা খাচ্ছেন তারা স্বাদ কতটা পাচ্ছেন? নাকি শুধু চোখের আরামেই ভোজন?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের প্রধান ড. ইয়ারুল কবির বলেন, এতে স্বাস্থের কোনো উপকারিতা নেই। যদিও কথায় কথায় বলা হয়, ত্বকের জন্য কিছুটা ভালো। কোলাজেন সৃষ্টি করে। অ্যাজমা, ফাঙ্গাল ইনফেকশনে কিছুটা কাজ করে। আসলে শরীরে খুব বেশি উপকার হয় না। শরীরের প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী দিনে সর্বোচ্চ ১.৩৩ মাইক্রোগ্রাম স্বর্ণ খাওয়া যাবে। এর বেশি খেলে অ্যালার্জি হবে

স্বর্ণ খাওয়ার উতিহাস অবশ্য ৫ হাজার বছর পুরনো। তৎকালীন মিশরে এর চল ছিল। তাদের বিশ্বাস ছিল, স্বর্ণে রয়েছে স্বর্গীয় প্রভাব। ভারতেও চামনপ্রাশে স্বর্ণ ব্যবহার করা হয়, বলা হয় এতে বুদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ বাড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বর্ণ খেতে হলে তা হতে হবে নিখাদ ২৪ ক্যারেটের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন শাহেদ বলেন, ই১৭৫ আইনের অধীনে খাবারে স্বর্ণ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। খাবারে ডেকোরেশনের জন্য যেমন অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়, বিষয়টাও তেমন। স্বর্ণ কেন খেতে হবে? আমি অনেক বড় লোক, এটা দেখানোর জন্য। হাজার বছর ধরে এর প্রচলন।

দেশে আলোচিত লাখ টাকার স্বর্ণ-আইক্রিমে ব্যবহার করা হয়েছিল গোল্ড লিফ ও পাউডার। কিন্তু কোথা থেকে তা সংগ্রহ করা হয়েছিল তা জানায়নি হোটেল কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্বে এমন খাবারযোগ্য স্বর্ণ তৈরি করে ৩টি প্রতিষ্ঠান। যার একটি যুক্তরাজ্যের কনিসিউর গোল্ড। অনলাইনে ঘেটে দেখা যায় এখান থেকে তিন ইঞ্চি বাই তিন ইঞ্চি একটি ফিনফিনে স্বর্ণের পাতা কিনতে গুনতে হবে মাত্র চারশ টাকা। আর এক গ্রাম পাউডারের দাম পড়ে ১২ হাজার টাকার মতো।

স্বর্ণ কী পরিমাণ এবং কী মানের স্বর্ণ খাওয়া যাবে এ নিয়ে উন্নত বিশ্বে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে কাউন্সিল। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এর দেখভালের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply