জ্বালানি সাশ্রয়ে ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার। ডিজেলের ব্যবহার না কমায় আবারও কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়া সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিপিসি। আদৌ এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নিয়ে আছে সন্দেহ।
চলমান জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় গত ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয় পরিকল্পিত লোডশেডিং। কথা ছিল দিনে ১ থেকে ২ ঘণ্টা থাকবে না বিদ্যুৎ। যদিও বাস্তবে অনেক জেলাতেই ভোগান্তি হয়েছে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত।
কয়েকজন ভুক্তভোগী জানালেন, প্রতিদিনই কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকে না। এক ব্যবসায়ী বললেন, এভাবে লোডশেডিং চললে আমরা তো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাতে পারবো না। আরেক শিক্ষার্থী জানান, লোডশেডিংয়ে কারণে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিজেল চালিত এক হাজার দুই শত মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখে সরকার। ধারণা ছিল, এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেড হবে প্রতিদিন। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে বেড়েছে ডিজেলচালিত জেনারেটরের ব্যবহার। এমনকি আইপিএস চার্জে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জানিয়েছেন, বিদুৎ যখন থাকে না তখন অনেকে জেনারেটর, আইপিএস কিংবা বিভিন্ন চার্জার ব্যবহার করছেন। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, গ্রাহকের চাহিদা কমার তথ্য আমার কাছে তেমন নেই। প্রতিদিন গড়ে যা বিক্রি হতো তা ঠিকই আছে। কোনোদিন ১৩ হাজার, কোনোদিন সাড়ে তের হাজার আবার কোনোদিন ১৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। এ রকম ব্যবধান তো থাকবেই।
এমন অবস্থায় আবারও ডিজেল চালিত কম্বাইন্ড সাইকেল কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরুর চিন্তাভাবনা সরকারের। মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কম্বাইন্ড সাইকেলে আছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র না চালিয়ে যদি অদক্ষ জেনারেটরগুলো একই পরিমাণ ডিজেল নেয়, তাহলে আমাদের কর্তৃপক্ষের ডুয়েল ফিল কম্বাইন্ড সাইকেল যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ছিল সেগুলো হয়তো চালানো হতে পারে।
সপ্তাহে একদিন বন্ধ রাখার কথা ছিল পেট্রোল পাম্প। সে বিষয়ে এখনও কোনো কিছু চূড়ান্ত করতে পারেনি বিপিসি।
এ বি এম আজাদ বলেন, এটা খুবই উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত ছিল না। আজ পর্যন্ত পেট্রোল পাম্প বন্ধ করা হয়নি। এটা কতোটা ইতিবাচক হবে, তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা হবে, এটা আসলে একটা সুপারিশ ছিল।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, গত দশদিনের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে লোডশেডিংয়ের বাস্তবসম্মত শিডিউল করার চেষ্টা করছে সরকার।
/এমএন
Leave a reply