আল-কায়েদা প্রধান আয়মান-আল-জাওয়াহিরি নিহত হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল ‘হেলফায়ার’। এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে চলছে নানা বিচার-বিশ্লেষণ। বিস্ফোরকহীন এই ক্ষেপণাস্ত্রে সংযুক্ত আছে ৬টি ধারালো ব্লেড। ফলে কেবল লক্ষ্যবস্তুকেই নিখুঁতভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেয় এটি। ঘটে না কোনো বিস্ফোরণ; এড়ানো যায় অনাকাঙ্খিত প্রাণহানি। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন প্রযুক্তি প্রসঙ্গে স্বীকারই করছে না যুক্তরাষ্ট্র।
দ্য সানের প্রতিবেদনে বলা হয়, লেজার লকের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতার জন্য বিশ্বের অন্তত ২৪টি দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে হেলফায়ার। ভূমি ও আকাশ থেকে উৎক্ষেপযোগ্য এ মিসাইল ব্যবহৃত হয় মূলত বাংকার, রাডার, হেলিকপ্টার এবং ট্যাংক ধ্বংস করার জন্য। স্বল্প পাল্লার এই মিসাইল ১১ কিলোমিটারের মধ্যে কার্যকর। বহন করতে পারে ৮ কেজির মতো বিস্ফোরক।
পানামা, যুগোশ্লোভিয়া, ইরাক কিংবা আফগানিস্তানে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে বারবার সমালোচিত হতে হয় এর শক্তিশালী বিস্ফোরণে, অনাকাঙ্খিত প্রাণহানি নিয়ে। অভিযোগ ওঠে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের টার্গেট করা হলেও এই ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে প্রাণ গেছে বহু বেসামরিক মানুষের।
সেই জটিলতা এড়াতেই ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো হেলফায়ার মিসাইলের আর৯এক্স সংস্করণ ব্যবহার করতে শুরু করে মার্কিন বাহিনী। আনুষ্ঠানিক নাম আর৯এক্স হলেও কাজের ধরনের কারণে এটি পরিচিত নিঞ্জা মিসাইল নামে। সবার অলক্ষ্যে শুধুমাত্র টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। কিন্তু ক্ষতি হবে না আশপাশে থাকা কারও।
প্রায় ৪৫ কেজি ওজন আর ৬ ফুট দীর্ঘ হেলফায়ার নিঞ্জায় বিস্ফোরকের বদলে থাকে ৬টি ধারালো ব্লেড। মূলত মানবদেহকে লক্ষ্য করে চালানো হয় এই মিসাইল। আঘাত হানার ঠিক আগমুহুর্তে খুলে যায় ব্লেডগুলো। অনেকটা নিঃশব্দ আর কোনো ধরনের বিস্ফোরণ ছাড়াই নিঃশেষ করে দেয় টার্গেটকে। ফলে আল কায়েদা নেতা জাওয়াহিরিকে লক্ষ্য করে আঘাত হানলেও হয়নি কোনো বেসামরিক প্রাণহানি। এমনকি বেঁচে গেছেন তার আশপাশে থাকা পরিবারের সদস্যরাও।
২০১৭ সালে সিরিয়ায় আল কায়েদা নেতা খায়ের আল মাসরি এবং ২০১৯ সালে জঙ্গি নেতা আলি আল বাদাবিকে হত্যা করা হয় হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়।
/এমএন
Leave a reply