ইসরায়েলি মিসাইল আর গোলার আঘাতে ধ্বংসস্তূপ গাজা উপত্যকার রাফাহ সীমান্ত। মাত্র তিনদিনের অভিযানে ঝড়ে গেছে বহু প্রাণ। এ যেন কিছুদিন বিরতি দিয়ে গাজায় হামলা চালানো নিয়মে পরিণত করেছে ইসরায়েল। কিন্তু ছোট্ট এ উপত্যকা বারবারই কেন টার্গেট হচ্ছে?
অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে দীর্ঘদিনের সংকট জিইয়ে রাখতেই এ কৌশল। নানা অজুহাতে হামলা চালালেও বিপুল শক্তিধর ইসরায়েল কখনোই গাজা অধিগ্রহণের চেষ্টা করেনি। বরং ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে চাপ তৈরি করতে চায় ফিলিস্তিনিদের ওপর। খবর রয়টার্সের।
গত কয়েক দশকে, ভূমধ্যসাগর তীরের ছোটো উপত্যকাটি যতোবার হামলার শিকার হয়েছে, সারা বিশ্বে তা নজিরবিহীন। ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের ওই ভূখণ্ডে মানবেতর জীবনযাপন করছে ২১ লাখের বেশি মানুষ। ২০০৬ সালে সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উপত্যকাটি অবরুদ্ধ। বর্হিবিশ্বের সাথে গাজাবাসীর যোগাযোগের একমাত্র পথ এখন রাফাহ সীমান্ত। মিসরের সাথে এ সীমান্ত দিয়েই আমদানি হয় খাদ্য, ওষুধসহ জরুরি পণ্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশরা বলেন, দফায়-দফায় মিসাইল ছুড়ে আসলে হামাসকে যুদ্ধে সম্পৃক্ত করতে চায় ইসরায়েল। দলটির শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে পেতে চায় বাহবা। কমাতে চায় শত্রু সংখ্যা। বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মিসর যাতে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয় এটাও ইহুদিদের কৌশল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা ইস্যুতে স্পষ্টভাবেই দ্বৈত নীতি পশ্চিমাদের। মাত্র ৫ মাসের যুদ্ধেই ইউক্রেনের জন্য সহযোগিতা-সমর্থনের কমতি নেই বিশ্বে। অথচ, দশকের পর দশক আগ্রাসনের শিকার ফিলিস্তিনিদের পাশে আছে কম দেশই।
মারওয়ান বিশরা আরও বলেন, ইউক্রেনে অভিযান শুরু হতে না হতেই পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এমনকি রণক্ষেত্রে লড়ার জন্য কিয়েভকে দেয়া হয়েছে কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা। অথচ, একই আগ্রাসন গেলো পাঁচ দশক ধরে সইছেন ফিলিস্তিনিরা। গাজা উপত্যকায় অভিযান চালাতে ইসরায়েলের কোনো কারণ লাগে না।
২০০৮ থেকে গাজায় চারটি বড় অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের হিসাবে এসব হামলা-আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। যাদের বড় অংশই বেসামরিক নাগরিক।
/এমএন
Leave a reply