স্টাফ করেসপনডেন্ট, দিনাজপুর:
বড় হয়ে গরীব রিকশাচালক বাবা ও অভাবী সংসারের মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর অদম্য ইচ্ছা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিবন্ধী সুমাইয়া। বিকলাঙ্গতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। মাত্র দু’বছর বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন সে এক পায়েই চলাফেরা করে।
লাঠি বা কারো সাহায্য ছাড়ায় গ্রামীণ পথ বেয়ে স্কুল যাওয়া তৃতীয় শ্রেণির শিশুটি সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে স্কুল যাচ্ছে আবার বাড়িতে মায়ের কাজে সাহায্যও করছে।
সুমাইয়ার বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের আলীপাড়ায়। তার বাবা পেশায় একজন রিকশাচালক। এক পায়ের ওপর ভর করে বেড়ে উঠা সুমাইয়া আলোকডিহী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে প্রতিদিন এক কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে যায়। বিকলাঙ্গতার কারণে নিয়মিত স্কুলেও যেতে পারে না।
স্কুলের শিক্ষিকা বলেন, পড়ালেখায় সে খুব মনোযোগী। স্কুল থেকে যতটুকু সম্ভব বই খাতা দিয়ে তাকে সাহায্য করা হয়। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ দেখে এলাকাবাসী অবাক হয়ে যায়। তার আগ্রহ এখন গ্রামের গরীব পরিবারের সন্তান ও অভিভাবকদের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুমাইয়ার মা জানান, দুই বছর বয়সে একটি দুর্ঘটনায় পা বেঁকে যায়। বাম পা এখন ডান পা থেকে ছোট হয়ে গেছে। ছোট হয়ে যাওয়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় পা আর মাটি স্পর্শ করতে পারে না। ফলে তাকে এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে হয়। আর এভাবেই সে স্কুলে যায় এবং বাড়িতেও আমাকে কাজে সাহায্য করে। দুর্ঘটনার পর প্রথমে স্থানীয়ভাবে এবং রংপুরে ডাক্তার দেখিয়েছি। টাকার অভাবে নিয়মিত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। যখন টাকা জমা হয় তখন ডাক্তার দেখানো হয়।
পেশায় রিকশাচালক শফিকুল বাসায় না থাকায় তার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আট বছর ধরে চিকিৎসা করিয়েছি। কোনো ফল পাইনি। অর্থপেডিক্সের চিকিৎসকরা বলেছেন, তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে মেয়ের পা ভালো করতে। কিন্তু আমি তো রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই, কোথায় পাব এত টাকা।
/এনএএস
Leave a reply