আরও জটিল হয়ে উঠেছে ইরাকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। চলমান সহিংসতা বন্ধ না হলে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল খাদিমি। এদিকে, গ্রিনজোনে নিজ অনুসারীদের হামলা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সহিংসতার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সাদর। এ অবস্থায় রাজনৈতিক সংকট কাটাতে আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন ইরাকি প্রেসিডেন্ট।
সহিংসতার তিনদিন পার হতে চললেও, এখনও স্বাভাবিক হয়নি বাগদাদের পরিস্থিতি। গ্রিন জোন থেকে সাদরের সশস্ত্র অনুসারীরা সরে গেলেও রাজধানীর উপকণ্ঠের বিভিন্ন এলাকায় এখনও চলছে বিচ্ছিন্ন গোলাগুলি। থমথমে পরিস্থিতি ইরাকের প্রতিটি বড় শহরে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ ইরাকিদের মাঝে।
এ পরিস্থিতিতে, পার্লামেন্টে অবস্থান কর্মসূচি, প্রেসিডেন্ট প্যালেসে তাণ্ডব আর নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় নিজ দলের অনুসারীদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বয়ং মুক্তাদা আল সাদর। গ্রিন জোনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পার্লামেন্ট, বিদেশি দূতাবাস আর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন অবস্থিত, সেখানে এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
ইরাকি নেতা মুক্তাদা আল সাদর বলেন, যদি বিপ্লবের নামে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরে, প্রাণ নেয়া হয় তাহলে সেটা বিপ্লব নয় হত্যাকাণ্ড। এভাবে সরকারি স্থাপনায় হামলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এগুলো ইসলামে নিষিদ্ধ। যদি আপনারা আমার অনুসারী হন তাহলে এখনই অস্ত্র সংবরণ করে ঘরে ফিরে যান।
এদিকে, সোমবার (২৯ আগস্ট) থেকে চলমান সহিংসতা, গোলাগুলি, ভাংচুর আর প্রাণহানির ঘটনায় পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল খাদিমি। অন্যদিকে আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব প্রেসিডেন্টের। এ পরিস্থিতিতে, আরও জটিল হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল খাদিমি বলেন, আমরা সরকার গঠনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। অথচ সশস্ত্র হামলা চালানো হলো পার্লামেন্ট, প্রেসিডেন্ট প্যালেসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে। রাজনৈতিক সংকটের জবাব কখনো অস্ত্র দিয়ে হতে পারে না। এভাবে চললে আমি দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হবো।
এদিকে ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ বলেছেন, আমরা জটিল রাজনৈতিক সংকটে পড়েছি। কোনো পক্ষই কারও বক্তব্য মানতে নারাজ। আগাম নির্বাচনই পারে আমাদের এ সংকট থেকে মুক্তি দিতে।
প্রসঙ্গত, ইরাকে ১০ মাস আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সাদর জয় পেলেও, প্রয়োজন দেখা দেয় জোট সরকার গঠনের। ইরানপন্হীদের ক্ষমতার বাইরে রাখার পাশাপাশি সাদরের দেয়া বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে সম্ভব হয়নি জোট সরকার গঠন করা। এরফলে দেখা দেয় রাজনৈতিক সংকট।
/এসএইচ
Leave a reply