চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ। এ সংক্রান্ত ৪৮ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। তবে এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়েছে চীন।
প্রতিবেদনটিকে সম্পূর্ণ ‘অবৈধ ও অকার্যকর’ উল্লেখ করে পাল্টা ১৩১ পৃষ্ঠার একটি প্রতিক্রিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিকে ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছে চীন। খবর দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টের।
এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, আপনাদের উল্লেখ করা তথাকথিত সমালোচনামূলক প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু পশ্চিমাদের দ্বারা পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও অকার্যকর। প্রতিবেদনটি ভুল তথ্যে ঠাসা। এটি জিনজিয়াংকে ব্যবহার করে চীনকে নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক হাতিয়ার, যা পশ্চিমা কৌশলের অংশ হিসেবে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (৩১ আগস্ট) জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের ওপর চালানো নির্যাতনের বিস্তারিত পর্যালোচনা নিয়ে বহুল প্রতীক্ষিত ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের শেষ কর্মদিবসে প্রকাশিত হয় প্রতিবেদনটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারীরা, যা সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ করতে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার করছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে উইঘুর মুসলিমদের বিচারবহির্ভূত আটক করে রাখা হচ্ছে; চালানো হচ্ছে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন। জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণের নীতি।
তবে কত মানুষকে সরকার আটক করেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় জাতিসংঘ। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলোতে ১০ লাখের বেশি মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। দ্রুত তাদের মুক্তির আহ্বানও জানানো হয় প্রতিবেদনে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র্র।
এসজেড/
Leave a reply