সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন বাংলা গানের কিংবদন্তি গীতিকবি, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তিনি ভাসেন গণমানুষের শেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। এরপর তার জানাজা পড়ানো হয় তারই প্রিয় কর্মস্থল বিএফডিসিতে। সবশেষে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হন তার মায়ের কবরে।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে লেখা ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি এখনও রক্তে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। অথবা ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ যে প্রিয় গ্রামটির কথা মনে করিয়ে দেয়, সেটা তার কলমেরই জাদু। সময় পেরিয়েছে অনেক, গানগুলো রয়ে গেছে মানুষের মনে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে গেলেন কিংবদন্তি গাজী মাজহারুল আনোয়ার।
তার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি এ গীতিকবির মরদেহ ৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়। সেখানেই কবিকে দেয়া হয় রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা ‘গার্ড অব অনার’।
এ সময় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন সংস্কৃতি অঙ্গনের অসংখ্য শিল্পী-কলাকুশলী, ভক্ত ও স্বজনরা। ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন, কুমার বিশ্বজিৎ, মনির খান, নকীব খান, ইমন সাহাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। গীতিকবির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি অশ্রুসিক্ত নয়নে স্মৃতিচারণও করেছেন তারা। এ সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে দিঠি আনোয়ার ও ছেলে উপলও উপস্থিত হন। বাবার সৃষ্টি সংরক্ষণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তারা।
এরপর গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ নেয়া হয় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর বিএফডিসিতে। সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। এ সময় নন্দিত গীতিকবিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএফডিসিতে কবির মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন তিনি।
এরপর গুলশানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় জানাজা শেষে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে দাফন করা হয় বনানী কবরস্থানে। মায়ের কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। রচনা করেছেন ২০ হাজারের বেশি গান। তবু তৃপ্ত ছিলেন না কখনই। বাংলা গানের জগতে চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন এ কিংবদন্তি। বাঙ্গালীর জীবনের নানা অনুভূতিতে মিশে থাকবেন তিনি ও তার লেখা গানগুলো।
/এসএইচ
Leave a reply