লেবাননে অর্থসংকট: জমানো অর্থ ফেরত পেতে গণহারে চলছে ব্যাংক ডাকাতি

|

ব্যাংকের গ্লাস ভেঙে ভেতরে ঢুকছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: সংগৃহীত।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিপাকে লেবানন। ব্যাংকে নিজেদের গচ্ছিত অর্থ সঠিক সময়ে ফেরত পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। তাই আইন ভেঙে গণহারে ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটছে দেশটিতে। এসব ডাকাতির সাথে যারা জড়িত তারা প্রত্যেকেই দেশটির সাধারণ জনগণ। তাদের দাবি, নিরুপায় হয়ে ব্যাংক ডাকাতি ও দেশের আইন ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। নিজেদের টাকা ফেরত পেতে প্রয়োজনে আরও ব্যাংক ডাকাতি করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। খবর আলজাজিরার।

মূলত, ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রার দরপতন ঘটায় অর্থ উত্তোলনের ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে লেবানিজ সরকার। ফলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সাধারণ মানুষের। তাদের দাবি, ধনকুবের ও শিল্পপতিরা তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করছে দেশটিকে। অথচ, জনসাধারণ নিজ অধিকার আদায় করতে গেলেই তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

লেবাননের এমনই এক ক্ষুব্ধ নাগরিক বলেন, আমরা অপরাধী নই। ব্যবসায়ী-চাকুরিজীবীদের হিংস্র হতে বাধ্য করছে সরকার। যখন জরুরি ভিত্তিতে গচ্ছিত অর্থগুলো প্রয়োজন হচ্ছে, সে সময় সেগুলো আমরা হাতে পাচ্ছি না। পেলেও সেটা এক-তৃতীয়াংশ। অথচ ব্যাংকে আমানত থাকার পরও অর্থের অভাবে ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা করাতে পারছেন না অনেকে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনগুলোয় হামলা, জিম্মি আর ডাকাতির মতো ঘটনা আরও বাড়বে। আমাদের টাকা আটকে রেখে নির্লজ্জের মতো মুনাফার কোনো অধিকার নেই ব্যাংকগুলোর।

আরও এক ভুক্তভোগী আলা খোরশিদ বলেন, গত ৩ বছর ধরে দেশে কোনো সরকারব্যবস্থা বা ন্যায়বিচার দেখছি না আমরা। অথচ, সাইকেল বা রুটি চুরি করলে বা ব্যাংক জিম্মি হলে আইনি তৎপরতা চোখে পড়ে। ব্যাংকগুলো বলছে, পূর্ব-পরিকল্পনা অনুসারে চালানো হয়েছে ডাকাতি। আমরাও বলছি, ভবিষ্যতে আরও বাড়বে এমন ঘটনা। কারণ, বিকল্প পথ নেই।

মূলত, কয়েক বছর ধরেই চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে ভুগছে লেবানন। ডলারের বিপরীতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত লেবানিজ পাউন্ডের দরপতন ঘটেছে। তার ওপর, বৈরুত বন্দরের হিমাগারে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের কারণে খাদ্য-ভাণ্ডারে সংকট তৈরি করেছে।

এ পরিস্থিতির মধ্যেই ২০২০ সালে ব্যাংকখাতে কঠোর নীতিমালা আরোপ করে সরকার। অ্যাকাউন্টে টাকা থাকলেও একটি নির্দিষ্ট অংশের বেশি উত্তোলন করতে পারেন না গ্রাহকরা। এসব কারণেই এখন রাস্তায় নেমে ব্যাংকে হামলা চালিয়ে নিজেদের গচ্ছিত অর্থ ছিনিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply