নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ৫টি প্রস্তাব তুলে ধরেন। বাংলাদেশে আশ্রিত বিপুল এই জনগোষ্ঠীর মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
টেকনাফের বিশাল এলাকাজুড়ে মানবিক আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রতি বছর সেখানে জন্ম নিচ্ছে কমপক্ষে ৩০ হাজার শিশু। জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়ার ছয় বছর কেটে গেছে। এতদিন পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ন্যায়বিচার থেকে দায়মুক্তির বিরুদ্ধে, এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো উদ্যোগকে সমর্থন করবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করছে বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের সৃষ্টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর সমাধান তাদেরকেই করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আসিয়ানের পাঁচটি প্রস্তাব মেনে নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ব্যাপারে বাংলাদেশ জোর দাবি জানাচ্ছে।
সংকট সমাধানে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি প্রস্তাবের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আসিয়ানের শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়াসহ কফি আনান কমিশন’র সুপারিশ সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন জরুরি বলে মনে করেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেমন জাতিসংঘ ও আসিয়ানের প্রতি অনুরোধ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে তারা জোরালো ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে কামনা করে, মিয়ানমারে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দেশটির একার পক্ষে বহন করা কষ্টসাধ্য। তাই বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই সংকট সমাধানে এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নেতৃত্বে কার্যকর পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিপুল মার্কিন বিনিয়োগ চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
/এম ই
Leave a reply