ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে সহিংসতায় উত্তাল লেস্টার

|

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ ঘিরে সৃষ্ট ধর্মীয় সহিংসতাকে কেন্দ্র করে গত প্রায় এক মাস ধরে উত্তাল ব্রিটেনের লেস্টার শহর। বর্ণ এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার জন্য সুনামধারী শহরটিতে উত্তেজনার শুরু পাক-ভারত ক্রিকেট ম্যাচকে কেন্দ্র করে। যা পরে রূপ নেয় হিন্দু-মুসলিম সহিংসতায়। হামলা হয় দুই ধর্মের অনুসারীদের ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এ অবস্থায়, আলোচনায় বসে সব পক্ষকে ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন লেস্টারের হিন্দু এবং মুসলিম কমিউনিটি নেতারা।

বর্ণ এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার জন্য পরিচিত লেস্টারের প্রধান সড়কে চলছে মারামারি। সংঘাতে জড়ানো দুই পক্ষই ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী। কেবল ধর্মীয় পরিচয়ের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে এ বিরোধ।

ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের এ শহরটিতে উত্তেজনার শুরু গত ২৮ আগস্ট এশিয়া কাপে পাকিস্তান-ভারত ম্যাচকে কেন্দ্র করে। ওই ম্যাচের পর অভিযোগ ওঠে, লেস্টারের পাকিস্তানি বাসিন্দাদের ওপর হামলা করেছে ভারতীয় বংশোদ্ভুতরা। পরে মারমুখী হয় দুইপক্ষই। একপর্যায়ে যা রূপ নেয় হিন্দু-মুসলিম সহিংসতায়। সবচেয়ে বড় সংঘর্ষটি হয় গত ১৭ সেপ্টেম্বর। হামলা হয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও।

এদিকে, তুচ্ছ ঘটনায় এমন সহিংসতায় হতবাক লেস্টারের মানুষ। ভাষা, সংস্কৃতি প্রায় এক; দশকের পর দশক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বসবাস করা মানুষগুলো কেনো একে অপরের গায়ে হাত তুলছে-তা নিয়ে উদ্বিগ্ন দুই কমিউনিটিই।

৩৮ বছর ধরে লেস্টারে বসবাসরত এক স্থানীয় অধিবাসী বলেন, ধর্মীয় সহিংসতা কিংবা বিভাজন কখনই ছিলো না লেস্টারে। ৩৮ বছর ধরে এখানে আছি কিন্তু কখনোই এমন ঝামেলা হয়নি। গত কয়েক বছরে নতুন কিছু মানুষ যোগ হয়েছেন এখানকার কমিউনিটিতে। তাদের কারণেই এই বিভাজন আর সহিংসতা দেখা দিয়েছে। এ সংকট সমাধানে হিন্দু-মুসলিম সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

সহিংসতার দায়ে এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে অর্ধশত ব্যক্তিকে। নতুন করে সংঘাত ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। এ অবস্থায় আলোচনা বসেন দুই কমিউনিটির ধর্মীয় নেতারা। আহ্বান জানান সব ধরণের সহিংসতা বন্ধের।

লেস্টার ইসকন মন্দিরের প্রধান প্রদ্যুৎমনা গাজ্জার বলেন, আমরা এই শহরে একসাথেই এসেছি। সবাই একই ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। বর্ণবাদের বিরুদ্ধেও একসাথে লড়েছি।

মুসলিম কমিউনিটির নেতা ইসমাইল শাফি বলেন, মসজিদের সামনে জোরে গান বাজানো হচ্ছে। মুসলিমদের উস্কে দেয়া হচ্ছে যেনো তারা সরাসরি হামলায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমরা নিজেদের সংযত রেখেছি। কোনো আগ্রাসী আচরণ করিনি। যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো তৎপরতা ছিলো না সেখানে মুসলিমরা টহল দিয়েছে।

লেস্টারের হিন্দু কমিউনিটির নেতারা বলছেন, ভারতে গত কয়েক বছরে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের উত্থানের আঁচ লেগেছে কিছু প্রবাসীর মধ্যেও। সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে উস্কানি দিচ্ছে তারা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply