ভারতের সামাজিক মাধ্যমে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা নানা অপ্রচার চালিয়ে মুসলিমবিদ্বেষ জাগিয়ে তুলছে। যত দিন যাচ্ছে এর প্রবণতা ততই বাড়ছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে এভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে দুইজন মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে।
এবার প্রচারণার লক্ষ্যবস্তু মাদ্রাসা। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দাঁড়ি-টুপি পরা এক শিক্ষক বোরকা ও হিজাব পরা কয়েকজন মেয়েকে একিট ক্লাসরুমে কিছু পড়াচ্ছেন। সামনের ব্লাকবোর্ডে শিক্ষক লিখেছেন, ইসলাম ৩, হিন্দুইজম ০। এর মাধ্যমে মূলত বুঝানো হয়েছে, হিন্দু ধর্মের চেয়ে ইসলাম শ্রেষ্ঠ।
তবে ভারতীয় ফ্যাক্ট চেকিং সাইট ‘অল্টনিউজ’ জানিয়েছে, ছবিটিতে যে লেখা দেখা যাচ্ছে তা এডিট করে বসানো। প্রকৃত ছবিটি চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তোলা। তাতে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক কোনো বক্তব্য নেই।
অল্টনিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এটি ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরাখপুর এলাকার দারুল উলুম হোসেইনি মাদ্রাসার ছবি। গত ১০ এপ্রিল ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় ওই মাদ্রাসা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ।
তাতে জানানো হয়, মাদ্রাসাটিতে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষাকেও বেশ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এমনকি অন্যান্য মাদ্রাসায় সংস্কৃত ভাষা শেখানো না হলেও এখানে শিক্ষার্থীদেরকে এই ভাষাটিও শেখা হচ্ছে। আরও জানানো হয়, দারুল উলুম হোসেইনিতে সংস্কৃত ভাষা পড়ান একজন মুসলিম, যা ভারতে খুবই বিরল। এডিট করা ছবিটিতে দেখা যাওয়া মাদ্রাসা শিক্ষকই মূলত সংস্কৃত পড়ান।
কিন্তু হিন্দু উগ্রপন্থিরা ছবির ব্লাকবোর্ডের লেখাকে ফটোশপের মাধ্যমে বদলে দিয়ে তাতে সাম্প্রদায়িক কথা জুড়ে দেয়। এরপর সেই ফটোশপ করা ছবি দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতাকর্মীরা শেয়ার দিতে থাকেন। ‘WE SUPPORT NARENDRA MODI’ নামক ২৮ লাখ সদস্যের একটি গ্রুপও এই ভুয়া ছবিটি প্রচারে জড়িত ছিল।
Leave a reply