এক সপ্তাহে দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ, বেকায়দায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

|

ছবি: সংগৃহীত

এক সপ্তাহেরও কম সময়ে দুই বিশ্বস্ত মন্ত্রীর পদত্যাগে বেকায়দায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। পদ টিকিয়ে রাখা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়। গতকাল বুধবার (১৯ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধীরা রীতিমতো তুলোধুনো করেন ট্রাসকে। দলীয় সদস্যদের তোপেও নাজেহাল হতে হয় তাকে।

তবে, হাল ছাড়তে রাজি নন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এদিন প্রকাশ্যেই নজিরবিহীন বাক-বিতণ্ডায় জড়ান ক্ষমতাসীন টোরি দলের এমপিরা। খবর রয়টার্সের।

মূলত, বুধবার এক ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টেই নজিরবিহীন বাদানুবাদ হয় ক্ষমতাসীন টোরিদের মধ্যেই। ভোট নিয়ে জোরাজুরির অভিযোগও ওঠে। অনেকেই ক্ষোভ ঝারেন ট্রাসের ওপর। বিরোধীরাও প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন প্রধানমন্ত্রীকে।

বিরোধী নেতা স্যার কেইর স্টার্মার বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত সপ্তাহে প্রতিটি প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন। লেবারদের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের পরিকল্পনা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কী? দুঃখপ্রকাশ! এখন কি আমরা অর্থনৈতিক বিপর্যয় মেনে নিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেবো? যে অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছেন, লেজে গোবরে অবস্থার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তা।

ছয় সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে গ্রান্ট শেপসকে বরখাস্ত করেছিলেন লিজ ট্রাস। পরিস্থিতির ফেরে তাকেই ফিরিয়ে আনতে হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে। অথচ দলীয় প্রধান নির্বাচনের সময় লিজ ট্রাসের বিরোধিতা করেছিলেন শেপস। সেসময় অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টও সমর্থন দিয়েছিলেন ঋষি সুনাককে।

মূলত, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্কের জেরে ট্রাসের গদি নিয়েই চলছে টানাটানি। রক্ষণশীলদের বড় একটি অংশই তাকে সরকার প্রধানের পদে দেখতে চায় না। কোণঠাসা হয়েও অবশ্য হার মানতে নারাজ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সাফ জানিয়ে দেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থেই পদত্যাগ করবেন না।

লিজ ট্রাস বলেন, আমি ভুল স্বীকারও করেছি। যেটা জরুরি ছিল পরিকল্পনা পরিবর্তন। সেটা কিন্তু করেছি। দায়িত্বে আছি মাত্র দেড় মাস। এরইমধ্যে ইন্স্যুরেন্স বৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছি। সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বাড়তি। আমরা বরং সৎভাবে সমন্বয়ের চেষ্টা করছি। আমি ময়দান ছেড়ে পিছু হটা নয়, লড়াইয়ে বিশ্বাসী।

কর ছাড়ের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন লিজ ট্রাস, শুরুতেই ধাক্কা খায় তা। বাড়তি তহবিলের যোগান কোথা হতে হবে তা ছিল না ট্রাসের সংক্ষিপ্ত বাজেটে। টানাপোড়েনের জেরে নতুন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই ট্রাসের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রায় পুরোটাই বাতিল করে দেন জেরেমি হান্ট। নিজের পরিকল্পনায় ভুল ছিল বলে দায় স্বীকারও করেন ট্রাস।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply