করোনা মহামারির মধ্যে যক্ষ্মার প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত দুই বছরে এ রোগে মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ। গত ২৭ অক্টোবর এ নিয়ে একটি রিপোর্ট করে ডব্লিউএইচও যেখানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৫ থেকে ২০১৯ সালে যক্ষ্মায় মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল, মৃত্যুর হারও কমছিল। তবে ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে যক্ষ্মার চিকিৎসায় কিছুটা ভাটা পড়ে যায়। ২০২০ সাল থেকে যক্ষ্মায় মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। ২০২০ সালে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ। ২০২১ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ। গত দুই বছরে যক্ষ্মায় মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যক্ষ্মার হঠাৎ এমন প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে মূলত দায়ী হলো করোনাভাইরাস। কারণ ২০২০ সালে বিশ্বে করোনা হানা দেয়ার পর থেকেই বাড়ছে যক্ষ্মার প্রকোপ। এর কারণ হিসেবে ডব্লিউএইচও বলছে, করোনার সময় সমগ্র বিশ্ব এই ভাইরাসটিকে ঠেকানোর দিকেই সমস্ত মনোযোগ দিয়েছে। ফলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কম প্রাধান্য পেয়েছে যক্ষ্মা।
২০২১ সালে বিশ্বে যক্ষ্মায় মোট এক কোটি ৬ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ২০২০ সালের চেয়ে যা ছিল ৪.৫ শতাংশ বেশি। ২০২০ থেকে ২০২১ সালে প্রতি এক লাখে যক্ষ্মা আক্রান্তের হার বেড়েছে ৩.৬ শতাংশ। গত দুই দশকেও যা এতো বেশি হয়নি। ডব্লিউএইচও এর মতে, এখনই এর লাগাম টানা না গেলে ভবিষ্যতে বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াবে যক্ষ্মা।
ডব্লিউএইচও এর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যক্ষ্মায় বিশ্বের মোট আক্রান্তের দুই তৃতীয়াংশই হলো আটটি দেশে। দেশগুলো হলো ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ফিলিপাইন, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, বাংলাদেশ এবং ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। অন্যদিকে মৃত্যুর দিক থেকে শীর্ষে আছে চারটি দেশ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার ও ফিলিপাইন।
এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেডরস আধানম গেবরিয়াসুস বলেন, করোনা মহামারি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। সেই শিক্ষাগুলো প্রয়োগ করে সবাই মিলে যক্ষ্মাকে প্রতিহত করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, যক্ষ্মা হলো একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। এই রোগ বাহকের ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আক্রান্তদের কাশির মাধ্যমে বাতাসে সেই ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে অন্যকে আক্রান্ত করে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে এখন এই রোগ থেকে সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব।
এসজেড/
Leave a reply