পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তেহরিক ই ইনসাফের (পিটিআই)। রাতভর দেশটির নানা শহরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেন দলটির কর্মী-সমর্থকরা। এরইমধ্যে, শঙ্কামুক্ত হয়েছেন ইমরান খান। তার অভিযোগ, এ হামলার নেপথ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান। দেশের এই শীর্ষ ব্যক্তিত্বরা অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে সহিংস আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। খবর ওয়ান নিউজ ও এফপি’র।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দলীয় সমাবেশে ইমরান খানকে লক্ষ্য করে ছয় রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। এতে ডান পায়ে গুলি বিদ্ধ হন তিনি। বর্তমানে লাহোরের শওকত খানম হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। এ নিয়ে পিটিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ ওমর বলেন, হাসপাতালে আমাদের ডেকেছিলেন তিনি। তার হয়ে জাতির সামনে একটি বিবৃতি প্রকাশ করতে বলেছেন ইমরান খান। সেখানে ইমরান খান জানান, আগেই তার কাছে হামলার তথ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং আইএসআই প্রধান মেজর জেনারেল ফয়সালের নির্দেশে চালানো হয়েছে এই হামলা। ইমরানের দাবি, দেশের শীর্ষ পদগুলো থেকে তাদের প্রত্যাহার করা হোক। অন্যথায় দেশজুড়ে গণআন্দোলন হবে।
অবশ্য, পাকিস্তানের সরকারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ নাকচ করে দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি, হামলার পেছনের মূল কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। শিগগিরই বেরিয়ে আসবে কারা ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।
ইমরান খানের অভিযোগ অস্বীকার করে তথ্য মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, ঘটনাস্থল থেকেই আটক হয়েছে আততায়ী। গুজরাট পুলিশ স্টেশনে সে হেফাজতে রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে, এ হামলা সে একাই চালিয়েছে এবং তার টার্গেট ছিলেন ইমরান খান। মোটিভও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে ঐ ব্যক্তি। তবে বিস্তারিত তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী।
এ নিয়ে কথা বলছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ এলাহিও। তিনি বলেন, যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠনের নির্দেশ দিয়েছি। সন্ত্রাসবাদ, হামলার পেছনে মোটিভেশন এবং কে বা কারা এরসাথে জড়িত তা বের করাই আমাদের লক্ষ্য। তথ্য অনুযায়ী, আততায়ী একজন নন, বরং দু’জন। অপর ব্যক্তির সন্ধানে তল্লাশি চলছে। অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করাই প্রশাসনের কাজ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার পিটিআই’র লংমার্চ গুজরানওয়ালার আল্লাওয়ালা চক পার হওয়ার সময় শুরু হয় গুলিবর্ষণ। এ ঘটনায় ডান পায়ে তিনটি গুলিবিদ্ধ হন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান দলীয় এক কর্মী, আহত হন শীর্ষ নেতাসহ আরও ৯ জন।
মূলত, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর লাহোরে এই লংমার্চ কর্মসূচি শুরু করেন ইমরান খান। ১১ নভেম্বর ইসলামাবাদে মহাসমাবেশের মাধ্যমে শেষ হওয়ার কথা এই কর্মসূচি।
এসজেড/
Leave a reply