আজ জাতীয় সংবিধান দিবস। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়েছে ১৭ বার। যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তারা নিজেদের স্বার্থে যখন-তখন সংবিধান পরিবর্তন করেছে। এতে বিকৃত হয়েছে মূল চেতনা, খর্ব হয়েছে নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এমন মত সংবিধান বিশেষজ্ঞদের। রাষ্ট্রধর্ম আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় সংশয় তৈরি হয়েছে নাগরিকদের মধ্যে। তবে, জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় সংবিধানের রক্ষাকবচ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উনিশ’শ বাহাত্তর সালের চার নভেম্বর গণপরিষদে সংবিধান বিল গৃহীত হয়। সংবিধান কার্যকর হয়েছিল ১৬ই ডিসেম্বর। এর মধ্য দিয়ে দ্রুততম সংবিধান প্রণয়নের নজির তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। তবে, বার বার সংশোধনী আনার কারণে বদলে দেয়া হয় মৌলিক চেতনাও। রাষ্ট্রধর্ম, সংসদ সদস্যদের নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার সুযোগ না রাখা আর নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা বাতিল নিয়ে বিতর্ক আছে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড: শাহদ্বীন মালিক বলেন, ন্যূনতম সমঝোতায় আসা সম্ভব হলে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেও সংবিধান সংশোধন না করেও সমাধান পাওয়া যায়।
সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা ছিল কিনা, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো ইতিহাস তা ভবিষ্যতে বলতে পারবে।
বাংলাদেশের ৫১ বছরেই সংবিধান কাটাছেঁড়া করা হয়েছে ১৭ বার। এর বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয়। শাসকদের খেয়াল-খুশিতে বদলেছে সংবিধান, মত বিশেষজ্ঞদের। সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, একটা দেশের সংবিধানকে যখন তখন পরিবর্তন করা উচিত না। কিন্তু কখনও কখনও কেউ ক্ষমতা দখল করে এই সংবিধানকে নানাভাবে বিকৃত করেছে। এটার যথার্থ ব্যবহার করতে দেয়নি। এরকম একটা দুর্বলতা আমাদের আছে বা, ছিল।
জনগণের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখতে সংবিধানের ব্যাখ্যাকারী প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ আদালতের দারস্থ হওয়ার পরামর্শ তাদের। ড: শাহদ্বীন মালিক বলেন, ১৭ বার সংশোধনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সময়ই অধিকারগুলোকে খর্ব করা হয়েছে। বিচার না পাওয়া অনেকেই হয়তো জানেও না যে, সংবিধানের মাধ্যমে একটি প্রতিকার পাওয়া যাবে। এজন্য আদালতের দ্বারস্থ হওয়া লোকজনের সংখ্যা কম।
সংবিধানকে যথেচ্ছা পরিবর্তন ও প্রতিষ্ঠা করা কখনও উচিত না। এটা নাগরিকদের মনে একটা সন্দেহের সৃষ্টি করে। আমার মনে হয়, এ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া উচিত। এমনটি বলেছেন সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ।
/এম ই
Leave a reply