পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম সেমিফাইনালের আগে ফিরে আসছে ১৯৯২ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমির স্মৃতি। পাকিস্তান চায় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আর নিউজিল্যান্ড চাইছে ইতিহাস গড়ে জয়। এই লড়াইয়ে ব্লাক ক্যাপদের তুরুপের তাস হতে পারে- গ্লেন ফিলিপস ও ট্রেন্ট বোল্ট। অন্যদিকে ফাইনালে পৌঁছাতে পাকিস্তানের ভরসা হতে পারেন- রিজওয়ান ও শাহিন শাহ আফ্রিদী। মূলত এই তারকাদের উপরই থাকবে আলাদা নজর।
সেমির মঞ্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের লড়াই মানেই ব্ল্যাক ক্যাপদের জন্য হতাশার গল্প। ১৯৯২ থেকে ২০২২; অকল্যান্ড থেকে সিডনি- মঞ্চ বদলালেও বদলায়নি প্রতিপক্ষ।
সদ্য শেষ হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজেও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়ে শিরোপা জিতেছিল বাবর আজমের দল। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ডকে হারায় পাকিস্তান। অতীত ইতিহাস পাকিস্তানের দিকেই ঝুঁকে আছে। তবে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে মরিয়া উইলিয়ামসনরা যে বিন্দুমাত্র ছাড় দিবে না সেটি আর না বললেও চলছে।
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে বুধবার কারা হতে পারেন দুই দলের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার?
আসরজুরে ব্যাটিংয়ে হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখিয়েছে পাকিস্তানি ব্যাটাররা। বিশেষ করে দুই ওপেনার বাবর, রিজওয়ানদের ছন্দহীন ব্যাটিং পাকিস্তানের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। সেই সাথে বাবর আজমের ধীর গতিতে রান করাটাও পাকিস্তান দলের অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ।
তবে, পাকিস্তানের জন্য সেমির মঞ্চে ত্রাণকর্তায় রূপ নিতে পারেন রিজওয়ান ও শাহিন শাহ আফ্রিদী। আসরের শুরুটা ভালো না হলেও বিগ ম্যাচে রিজওয়ান হয়ে উঠতে পারেন সেরা অস্ত্র। এবারের আসরে বাইশ গজে ধুঁকছেন রিজওয়ান, তবে মনে রাখতে হবে এই বছরে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান দলের হয়ে সর্বাধিক রান তারই।
অন্যদিকে, ইনজুরি থেকে ফিরে প্রথম কয়েকটি ম্যাচ খারাপ বোলিং করলেও শেষ দুই ম্যাচে নিজের জাত চিনিয়েছেন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদী। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ ম্যাচে নিয়েছেন ৭ উইকেট। এছাড়াও, হারিস রউফ ও শাদাব খানরাও এই আসরে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছেন একাধিকবার।
বিপরীতে, নিউজিল্যান্ডের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হতে পারেন মিডল অর্ডার ব্যাটার গ্লেন ফিলিপস ও পেসার ট্রেন্ট বোল্ট।এবারের আসরে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বাধিক রান করেছেন ফিলিপস। আসরের ৩য় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এই ড্যাশিং কিউই ব্যাটার। সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরিও আছে মারকুটে এই ব্যাটারের। যতক্ষণ ফিলিপস ক্রিজে থাকবেন পাকিস্তান বোলারদের জন্য যে হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবেন।
অন্যদিকে, দলের সেরা পেসার ট্রেন্ট বোল্ট সুইং দিয়ে বাবর রিজওয়ানদের ধস নামাতে প্রস্তুত। বোল্টের সুইং ছাড়াও ডেথ ওভারে ইয়র্কার বলেও কুপকাত হতে পারেন পাক ব্যাটাররা। এছাড়াও ড্যাশিং ওপেনার ফিন অ্যালেন ও গতির ঝড় উঠানো পেসার লকি ফার্গুসন ও হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে পাকিস্তান দলের জন্য।
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে শোয়েব মালিকদের কাছে ৬ উইকেটে হেরে বিদায় নেয় ড্যানিয়েল ভেট্টোরির নিউজিল্যান্ড। এবার আবারও কিউইদের উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠতে চাইবে ভাগ্যের সহায়তায় সুপার টুয়েলভের বাধা ডিঙানো পাকিস্তান। অন্যদিকে, শিরোপা খরা কাটাতে মরিয়া কিউইরা চাইবে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে। সিডনিতে শেষ হাসি কে হাসে সেটি দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হবে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত।
Leave a reply