আধুনিক ফুটবল দেখালো তার বাস্তবিক নিষ্ঠুর চেহারা। এখানে শৃঙ্খলা, পরিকল্পনার কাছে হেরে কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো সুন্দর ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। টাইব্রেকারে বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট ব্রাজিলকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে ক্রোয়েশিয়া। ২০০২ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর পঞ্চমবারের মতো ইউরোপের দলের বিরুদ্ধেই আটকে গেলো ব্রাজিল।
৯০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকার পর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ম্যাচের ১০৪ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার চীনের প্রাচীর ভেদ করে ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন দলটির প্রাণভোমরা নেইমার। আসরের অন্যতম সেরা গোলটি করে তিনি দলকে দেখান সেমির স্বপ্ন। মনে হচ্ছিল, নেইমারের ক্ল্যাসিক গোলেই সাম্বা নৃত্যের ছন্দে শেষ চারে পৌঁছে যাচ্ছে ব্রাজিল। কিন্তু ম্যাচের ১১৫ মিনিটে সবাইকে হতবাক করে ক্রোয়াটদের সমতায় ফেরান পেতকোভিচ। বামপ্রান্ত থেকে অরসিচের বাড়ানো বলে বামপায়ে জোরালো শটে আলিসন বেকারকে পরাস্ত করেন পেতকোভিচ। আর খেলা গড়ায় টাইব্রেকার; অনুমিতভাবে যেখানে খেলাটি নিতে চেয়েছিল মদ্রিচ-কোভাচিচদের দল।
প্রথম অরসিচের গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। তারপর প্রথম শটে রদ্রিগো গোল করতে ব্যর্থ হলে চাপে পড়ে যায় ব্রাজিল। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধে উতরে যান লভরো মেজার। এরপরের শটে লক্ষ্যভেদে ব্রাজিলকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখেন কাসেমিরো। পরের শটে আস্থার প্রতিদান দিয়ে গোল করেন লুকা মদ্রিচ। পেদ্রি পরের শটে গোল করে ব্যবধান ২-৩ করেন। মিসলাভ অরসিচ পরের শটে আলিসন বেকারকে পরাস্ত করেন, ৪-২। স্কোর করতেই হবে, এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছোট্ট এক ভুল করে ফেলেন মারকিনিয়োস। পোস্টে গিয়ে লাগে তার শট। আর ভেঙে যায় ব্রাজিলের হেক্সা স্বপ্ন।
অন্যদিকে, গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া পৌঁছে গেলো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। লিভাকোভিচের বীরত্বের দিনের জন্য হয়তো নিজের সেরা পারফরমেন্স জমিয়ে রেখেছিলেন লুকা মদ্রিচ। আর বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো সুন্দরতম ফুটবল। বিদায়, ব্রাজিল। স্টেডিয়াম থেকে গোটা পৃথিবীর বিশাল এক অংশে এখন অখণ্ড নীরবতা।
Leave a reply