অস্ট্রেলিয়ায় সন্ধান মিলেছে ১০ কোটি বছর পুরনো জীবাশ্মের। মাটি খুঁড়ে প্রাগৈতিকহাসিক প্রাণীর পূর্ণাঙ্গ দেহাবশেষ উদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা। যা জীবাশ্ম গবেষণা খাতে সৃষ্টি করেছে বিস্ময়। গবেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে কোটি কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীদের বিবর্তনের রহস্য উন্মোচনে চমকপ্রদ তথ্য মিলবে। খবর রয়টার্সের।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক আমলের এই সরীসৃপ প্রজাতি প্লেসিওসরের দেহাবশেষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটির বয়স অন্তত ১০ কোটি বছর।
কোটি কোটি বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয় এই প্রাণীটি। তবে কুইন্সল্যান্ডে সেটির পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল উদ্ধারে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। যাকে বিরল এবং বিস্ময়কর হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তারা।
কুইন্সল্যান্ড মিউজিয়াম নেটওয়ার্কের সিনিয়র কিউরেটর ড. ইসপেন নাটসেন বলেন, জীবাশ্মটির সবচেয়ে অসাধারণ বিষয় হলো, কঙ্কালটির মাথার সাথে শরীরের অংশও যুক্ত ছিল। এটি দেখে আমরা অভিভূত হয়েছিলাম। মাটি খোঁড়ার সময় আমরা সাধারণত জরাজীর্ণ কঙ্কালের টুকরো টুকরো অংশ পাই। এটির সংযুক্ত মাথা এবং শরীরের পাওয়ার ফলে প্রজাতিগত অনেক বৈশিষ্ট্য উন্মোচন সহজ হবে। এমনকি সে সময়কার অন্যান্য সরীসৃপ সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, ১০ কোটি বছর আগের এই প্রাণীটি সম্পর্কে অনেক তথ্যই এখনও আমাদের অজানা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কত প্রজাতির লম্বা ঘাড়ওয়ালা সরীসৃপ তখন পৃথিবীতে ছিলো সেটা এখনও জানতে পারিনি। এই জীবাশ্মটি অনেক নতুন তথ্য উন্মোচনে সহায়ক হবে আশা করছি।
জীবাশ্ম বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলে-স্থলে উভয় জায়গায় বিচরণ ছিলো এই প্রজাতিটির। দৈর্ঘ্যে ১৯ ফুট। জিরাফের মত লম্বা ঘাড়ওয়ালা প্রাণীটি চলতো বুকে ভর দিয়ে। দৈহিক গঠন অনেকটা কচ্ছপের মত। তবে খোলসে আবৃত ছিলো না দেহ।
একই সময়কার হলেও এই প্রাণীটিকে ডাইনোসরের শ্রেণিভুক্ত নয়। ধারণা করা হয়, পূর্বপুরুষদের বিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে উভচর হয়েছে। সামুদ্রিক অন্য প্রাণীর মতো শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য তাদের ফুলকা ছিলো না। সেজন্য তারা ঠিক কতক্ষণ পানির নিচে থাকতে পারতো তা এখনও অজানা।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের একসময় বিশাল অগভীর সমুদ্রে ঘেরা অঞ্চল ছিলো। তাই অঞ্চলটিতে প্রায়ই সন্ধান মেলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর জীবাশ্ম।
এটিএম/
Leave a reply