যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলার আলামত জিআরও শাখা থেকে গায়েব

|

যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসান ও ভিডিও জার্নালিস্ট শাহীন আলম হত্যাচেষ্টা মামলায় ঘটনার আলামত হিসেবে জিআরও শাখার হেফাজতে থাকা ফুটেজের ডিভিডি পাওয়া যাচ্ছে না। রায় ঘোষণার জন্য আদালত ডিভিডি তলব করলে জিআরও শাখা চিঠি দিয়ে জানায় ডিভিডি পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে হত্যাচেষ্টা ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে বাধা দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটি গায়েব করা হয়েছে বলে অভিযোগ বাদী পক্ষের আইনজীবীর। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, জিআরও শাখা থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত গায়েবের ঘটনা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পক্ষে হুমকিস্বরূপ।

অবৈধ পলিথিন উৎপাদন নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে গেলে কারখানার মালিকরা হামলা করে যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসান ও ভিডিও জার্নালিস্ট শাহীন আলমের ওপর। এ সময় কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করা হয় শাকিলকে। ঘটনার দিনই শাকিল হাসান বাদী হয়ে রহিম, জব্বার ও জাকিরসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চকবাজার থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় করা মামলাটি ছয় বছর ধরে চলছে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। অভিযোগ প্রমাণে ঘটনার সময় ধারণ করা এই ফুটেজ ডিভিডি করে জমা দেয়া হয় আদালতে। যার উল্লেখ আছে মামলার কার্যক্রমের সব নথিতে। সাক্ষী, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যেও আছে এই ডিভিডির কথা।

বিচারিক কার্যক্রম শেষে চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য নির্ধারিত ছিল মামলাটি। পরে আরও দুই দফা তারিখ দিয়েও রায় হয়নি। এর মধ্যে গত ৮ নভেম্বর আদালত ঘটনার ফুটেজের ডিভিডি তলব করেন। তবে ওই ডিভিডি পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ঢাকা ডিএমপির উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. শওকত আকবর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জিআরও শাখা থেকে পাঠানো হয় আদালতকে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, মো. শওকতের পূর্ববর্তী জিআরও এসআই মো. হেলাল উদ্দীন ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই এ মামলা সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র আদালতে পেশ করেন। ফলে এ সংক্রান্ত কোনো নথি তথা ওই ফুটেজের কোনো ডিভিডি এখন জিআরও এর হেফাজতে নেই। বিষয়টি নিয়ে সিএমএম আদালতের মালখানা রেজিস্ট্রার ও আলামত মালামাল রক্ষণাবেক্ষণকারী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলেও ওই ডিভিডির কোনো হদিসই পাওয়া যায়নি। ফলে ডিভিডিটি এখন আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ঘটনায় ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বাদীর আইনজীবী এখলাছ উদ্দীন ভূইয়া বলেন, ডিভিডিটি আদালতে জমা দেয়া আছে, রিসিভ কপিও আছে। এখন এ পর্যায়ে এসে যদি আলামত গায়েব হয়ে যায়, তাহলে আমরা ন্যায়বিচার কীভাবে পাবো? তবে মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় বিষয়টি আবারও আদালত অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহজাহান মজুমদার।

এদিকে, ন্যায় বিচার বাধাগ্রস্ত করতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডিভিডি গায়েবের ঘটনা কিনা, আদালতের কাছে তা উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহজাহান মজুমদার বলেন, জিআরও থেকেই এই ডিভিডিটি গায়েব হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় অতি দ্রুত আলামত উদ্ধার করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply