ইলন মাস্কের সমালোচনাকারী একাধিক সাংবাদিকের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। গণমাধ্যমের সাথে এখন টুইটার সিইও’র বিরোধে রূপ নিয়েছে ইস্যুটি। মাস্কের পদক্ষেপে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। টুইটারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) থেকে হঠাতই একের পর এক স্বনামধন্য সাংবাদিকের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি থেকে বরখাস্ত হওয়াদের মধ্যে আছেন নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন, দ্য ইন্টারসেপ্ট এবং ভয়েস অব আমেরিকার মতো গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।
এরা সবাই বিভিন্ন সময় টুইটার বা ইলন মাস্কের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। সবশেষ বাদ পড়েন বিজনেস ইনসাইডারের এক কলামিস্ট। যিনি ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের টেসলার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ধারবাহিকভাবে রিপোর্ট করেছিলেন।
তবে, মাস্কের দাবি- ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে, তার পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলায় ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে কাউকে বিশেষ সুবিধা দেয়া হবে না বলেও জানান মাস্ক।
টুইটারের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ইলন মাস্ক এ প্রসঙ্গে বলেন, কারও অবস্থান জানতে রিয়েল টাইম ইনফরমেশন প্রকাশ গ্রহণযোগ্য নয়। সাংবাদিকরাও টুইটারের সাধারণ ব্যবহারকারী হিসেবেই বিবেচিত হবেন। তাই বিশেষ কোনো সুবিধা তারা পাবেন না।
এদিকে, সাংবাদিকদের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ঘটনায় তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। মাস্কের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মাইক্রোব্লগিং সাইটটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ইইউ।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিচ বলেন, গণমাধ্যমের আওয়াজ কখনও বন্ধ করা উচিত নয়। বিশেষ করে এমন একটি প্ল্যাটফর্মে, যারা বাকস্বাধীনতার পক্ষে। আমাদের অবস্থান থেকে এটা বিপজ্জনক পদক্ষেপ বলে মনে করছি। কারণ, এমনিতেই বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা সেন্সরশিপ, শারীরিক হুমকিসহ নানা ধরনের হুমকির মুখোমুখি।
তীব্র সমালোচনার জেরে পরে অবশ্য টুইটারে এক ভোটাভুটি আয়োজন করেন মাস্ক। যেখানে সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। অ্যাকাউন্ট সচলের পক্ষে ভোট দেয় ৪৩ শতাংশ ব্যবহারকারী।
প্রসঙ্গত, নানা নাটকীয়তার পর গত অক্টোবরে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে টুইটারের মালিকানা কিনে নেন ধনকুবের এলন মাস্ক।
/এসএইচ
Leave a reply