বিশ্বকাপ ফুটবলের পর্দা নামলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনায় রয়ে গেছে কাতার। দেশটির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য লুকাতে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের ঘুষ দিয়েছে তারা। এ ঘুষকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় চলছে ইইউতে। উদ্ধার হয়েছে ঘুষের টাকাও। অবশ্য তদন্তে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দিয়ে রেখেছে কাতার। খবর বিবিসির।
কাতারের দেয়া ঘুষের টাকা লাগেজে ভরে বাবার বাসায় রেখেছিলেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইভা কাইলি। এমন লাগেজভর্তি ইউরো মিলেছে পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য পিয়ের আন্তোনিও পানজেরির বাড়িতেও। ব্রাসেলসের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট ১৫ লাখ ইউরো উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুর্নীতির অভিযোগে এ দু’জনসহ ইইউর চার আইনপ্রণেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
নজীরবিহীন এই ঘটনা আলোড়ন তুলেছে বিশ্বজুড়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর এটিই সবচেয়ে বড় দুর্নীতির ঘটনা। নগদ অর্থ ছাড়াও আইন প্রণেতাদের বিরুদ্ধে বিলাসবহুল ঘড়ি-গাড়িসহ নানা দামী উপহার নেয়ার অভিযোগও উঠেছে। ইইউর এই কেলেঙ্কারিতে উঠে আসছে কাতার-মরক্কোর নামও।
ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে মানবাধিকার ইস্যুতে পশ্চিমাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কাতারের অবস্থান। বিশ্বকাপের রেশ না কাটতেই আবারও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে আলোচনায় তারা। তবে, অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। তারা বলছে, এই তদন্ত ইইউর সদস্য দেশগুলোর সাথে কাতারের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমনকি প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের আলোচনাও বাধাগ্রস্ত হবে বলেও হুমকি দিয়েছে উপসাগরীয় দেশটি।
এনিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত কাতারের কূটনীতিক বলেন, এ ধরনের বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা সহযোগিতায় নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট, দারিদ্র্যতা ও নিরাপত্তা নিয়ে চলমান আলোচনাকেও প্রভাবিত করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের দেশ একচেটিয়াভাবে সমালোচনা ও আক্রমণের শিকার।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এরইমধ্যে জ্বালানি সংকটে বিপাকে ইউরোপের দেশগুলো। বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাস সরবরাহকারী দেশ কাতারের এই হুমকি ইউরোপে নতুন সংকটের শঙ্কা জাগাচ্ছে।
এসজেড/
Leave a reply