শচীন রমেশ টেন্ডুলকার আর লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। এ প্রজন্ম আক্ষেপ করে বলতো তাদের হাতে বিশ্বকাপ না উঠলে অপূর্ণ থেকে যাবে খোদ বিশ্বকাপ ট্রফি। বিধাতার অদ্ভুত খেলায় নিজেদের শেষ বিশ্বকাপে সেই সোনালী স্বপ্ন ধরা দেয় দুই বিশ্বসেরার হাতে। দুই রাজার গল্পে এক বিন্দুতে মিলে যায় ক্রিকেট আর ফুটবল।
অমরত্বের প্রত্যাশা নেই, নেই কোন দাবি দাওয়া। এই নশ্বর জীবনের মানে শুধু তোমাকেই চাওয়া।
এক জীবনে কতটাই আর চাওয়া যায়। এক জনমে কতটাই বা পাওয়া যায়। তবুও মুম্বাইয়ে জন্ম নেয়া কোঁকড়া চুলের ছোট্ট ছেলেটা যেন জাতিশ্বর হয়ে বেড়ে ওঠে আর্জেন্টিনার ছোট্ট শহর রোসারিওয়। পুরো পৃথিবীর কাঁধে চড়ে অমরত্ব লাভ করে জার্সি নাম্বার টেন।
দুজনেই এ প্রজন্মের সেরা। একজন ক্রিকেটের ক্যানভাসে ব্যাট হাতে পাবলো পিকাসো তো আরেকজন ফুটবল পায়ে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। আকাশ সমান অর্জনের পর তবুও থেকে যায় ঐ একটাই অপ্রাপ্তি। স্বপ্নের খুব কাছে যেয়েও বেড়ে চলে সোনালী ট্রফিতে শেষ চুম্বনের অপেক্ষা।
১৯৮৯ সালে প্রথম বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলেছিলেন শচিন। এরপর ৯২ থেকে ২০০৭ টানা আরো পাঁচ বিশ্বকাপ, ব্যর্থ। তারপর শচীনের জীবনে নেমে আসে ১১। জানিয়ে দেন শেষবার বিশ্বকাপে নামছেন তিনি। ক্রিকেট ঈশ্বরকে এবার আর নিরাশ করেননি ভাগ্য বিধাতা। নিজের শহর মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতেন শচীন রমেশ টেন্ডুলকার।
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা। ক্লাবের জার্সিতে এমন কোন ট্রফি নেই যা অধরা। কিন্তু দেশের হয়ে বিশ্বমঞ্চে বার বার শূন্য হাত। ২০২১ এ কোপা আমেরিকা জিতলেও বুকের মাঝে বেড়েই চলে সেই অভাবের ক্ষত। সইতে হয় দেশের জার্সি গায়ে ব্যর্থতার গ্লানি। এর মাঝেই জানিয়ে দেন এটাই শেষ বিশ্বকাপ। কে জানতো শচীনের এগারোর সাথে মিলে যাবে মেসির বাইশ, বিদায়ের মুহুর্তে দুহাত ভরে দেবেন ঈশ্বর।
শচীন আর মেসির জন্য শেষবার সতীর্থরা লড়েছিলেন প্রাণপন। দুহাতে গ্লাভস পরে এম এস ধোনি আর এমিলিয়ানো মার্টিনেজ যেন হয়ে উঠেছিলেন প্রধান সেনাপতি। গোটা প্রজন্মকে সাক্ষী করে রাজারা পরলেন বিশ্বজয়ের রাজমুকুট। যেন বিধাতার নিজের হাতে গড়া দুই মাস্টারপিস।
/আরআইএম
Leave a reply