তীব্র তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। হিমাঙ্কের নিচে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমেছে তাপমাত্রা। সর্বোচ্চ সতর্কতার আওতায় দেশটির ২৪ কোটি মানুষ। প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে এখন পর্যন্ত ১২ জনে। শুক্রবার একদিনে বাতিল হয় ৬ হাজার ৭শ’য়ের বেশি ফ্লাইট। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে ১৫ লাখ মানুষ। বম্ব সাইক্লোনে রূপ নিয়েছে মধ্য-পশ্চিমের শীতকালীন এই ঝড়। এর প্রভাবে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নিউ ইয়র্কসহ উপকূলীয় বেশ কয়েকটি এলাকা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বিপর্যস্ত কানাডাও। খবর রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে কানাডার কিউবেক ২ হাজার মাইলের বেশি এলাকায় ছড়িয়েছে এ তুষার ঝড়। বরফে পরিণত হয়েছে সীমান্তবর্তী গ্রেট লেক। রাস্তা জুড়ে বরফের পুরু আস্তর, ভয়াবহ শীতকালীন ঝড়ে ঝাপসা চারদিক। এমন পরিস্থিতিতে ওহাইওতো দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৫০টি গাড়ি। সেখানে মৃত্যু হয় দু’জনের।
মার্কিন ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে মন্টানায়। যা নেমে দাঁড়িয়েছে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এদিকে, তীব্র তুষারঝড়ে নাকাল পেনসিলভানিয়া, মিশিগানের জনজীবন। কমপক্ষে ৩৫ ইঞ্চি পুরু বরফের আস্তর জমেছে বাফেলোতে। লুইজিয়ানা, অ্যালবামা, ফ্লোরিডা, জর্জিয়ার মতো অঙ্গরাজ্যগুলোয়, যেখানে এসময় কিছুটা সহনীয় থাকে তাপমাত্রা, সেসব জায়গাও পড়েছে বিরূপ আবহাওয়ার কবলে। ডেনভার, কলোরাডোতেও ১৯৯০ সালের পর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
দুর্যোগের কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বহু মহাসড়ক। ফ্লাইট বিপর্যয় গোটা দেশেই। ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইট অ্যাওয়ার জানায়, শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রে একদিনেই বাতিল হয়েছে ৫ হাজার ৭শ’য়ের বেশি ফ্লাইট।
তুষারঝড়ের কারণে আটকে পড়ে ক্রিসমাস উপলক্ষে পরিজনের কাছে যেতে পারছেন না অনেকেই। ওয়াশিংটনে আটকে পড়া এমন একজন বলেন, সাউথ ডাকোটায় বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ। তাই গাড়ি নিয়ে নেব্রাসকায় গিয়েছি। সেখান থেকে ওয়াশিংটনে এসেছি। এখানেও আটকে আছি। ফ্লাইট দেরি হবে। যেখানে যাবো সেখানেও তলিয়ে আছে। সব পরিকল্পনা ওলটপালট হয়ে গেলো।
জানা গেছে, মধ্য পশ্চিমের তুষারঝড় রূপ নিয়েছে বম্ব সাইক্লোনে। এর ফলে বাতাসের চাপ কমে গিয়ে বেড়েছে ঝড়ের তীব্রতা। যা বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে, নিউইয়র্কসহ উপকূলীয় এলাকায়।
প্রসঙ্গত, বিরূপ আবহাওয়ার কবলে পড়েছে কানাডাও। তুষার ঝড় ও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্টারিও ও কিউবেক। দুর্যোগপূর্ণ রাজ্যগুলোয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
/এসএইচ
Leave a reply