নিরাপদ জীবনের খোঁজে সাগরপথে ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোয় ছুটছে রোহিঙ্গারা। কাঠের নৌকায় মাসের পর মাস ভেসে সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছেন তারা। মাঝ সমুদ্রে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই। গত নভেম্বরেও সাগরে মৃত্যু হয় কমপক্ষে ২০ রোহিঙ্গার। মূলত, শীতকালে সমুদ্র কিছুটা শান্ত থাকায় সমূদ্রযাত্রার জন্য এ সময়টাকেই বেছে নেন তারা। গত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২২ সালে রোহিঙ্গাদের সমুদ্র পাড়ি দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে।
কাঠের নৌকায় সুবিশাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় গেছে রোহিঙ্গাদের একাধিক বহর। উন্নত জীবনের আশায় এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে সংখ্যালঘু এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর অনেকেই ছুটছেন থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে।
কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই দফায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নৌকায় চেপে পাড়ি জমিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার আচেহ্ প্রদেশে। দীর্ঘ সমূদ্রযাত্রায় এদের অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
ইন্দোনেশিয়ান এনজিও কর্মী মোহাম্মদ মিসবাহুল এ প্রসঙ্গে বলেন, বেশিরভাগের অবস্থাই গুরুতর। তিনটি স্থানীয় ক্লিনিকের স্বাস্থকর্মীরা তাদের দেখাশোনা করছেন। তবে আমাদের পর্যালোচনা বলছে, এদের অনেকেরই আরও ভালো চিকিৎসা দরকার।
মূলত, নভেম্বর থেকে এপ্রিল; এ ছয় মাস সমুদ্র তুলনামূলক শান্ত থাকে। আর তাই, শীতের এ সময়টাতে প্রতি বছরই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন। কয়েক সপ্তাহ তাদের গভীর সমুদ্রেই থাকতে হয়। ফলে পানিশূন্যতা ও ক্লান্তিসহ নানা জটিল সমস্যায় ভোগেন তারা। এমনকি প্রাণও হারান অনেকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, সাম্প্রতিক সময়ে সাগরে অন্তত ২০ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার সমুদ্র পাড়ি দিতে চাওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা সাগরে প্রাণ হারাতে পারেন।
এর আগে, গত নভেম্বরে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে মোট ২৩০ জন রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। এছাড়া চলতি মাসের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ১০৪ জন রোহিঙ্গাকে।
২০১৭ সালে, সেনা নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১২ লাখ।
/এসএইচ
Leave a reply