রংপুর সিটি নির্বাচনে অনেকটা নীরবেই রীতিমতো চমক দেখিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী নয়, জাতীয় পার্টির বিজয়ী মেয়র প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন চরমোনাই পীরের দল থেকে! তিনি ভোট পেয়েছেন ৫০ হাজারের কাছাকাছি, যা দলটির গত সিটি নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের দ্বিগুণ। দলের নেতারা বলছেন, হঠাৎ করে নয়; বরং তাদের এমন উত্থান ধারাবাহিক সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার ফল। স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে আগামীতে জাতীয় পরিসরে ইসলামী রাজনীতিতে নতুন ক্ষেত্র তৈরির স্বপ্ন দেখেন দলটির নেতারা।
ছবি দেখে মনে হতেই পারে, ভোটে জেতায় বুঝি এমন আনন্দঘন মুহূর্ত তাদের। যদিও প্রকৃতপক্ষে এ প্রার্থী রংপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন। এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ, প্রথমবারের মতো ৫০ হাজারের কাছাকাছি ভোট পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে রসিক নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মো. আমিরুজ্জামান বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যে ব্যর্থতা সেটিই আমাদের সাফল্যের কারণ। তাদের জনপ্রতিনিধিদের মাঝে যে অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে সেটি আমাদেরকে এগিয়ে দিয়েছে।
দলটির নেতারা বলছেন, ১৯৮৭ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে তারা ক্রমে ক্রমে নিজেদের সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন। ২০১৭ সালে রংপুর সিটি নির্বাচনে ২৪ হাজার ভোট পেয়ে দলটি চমকে দিয়েছিলো সবাইকে। এরপর সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আরও কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়ে তারা আলোচনায় আসে। সবশেষ, জাতীয় নির্বাচনে দলটি তিনশো আসনেই প্রার্থী দিয়েছিলো। দলের নেতাদের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয়তার কারণে তাদের ভোট বাড়ছে।
রংপুর মহানগর ইসলামী আন্দোলনের উপদেষ্টা এটিএম গোলাম মোস্তফা বলেন, তৃণমূল পর্যায় থেকেই আমরা জনগণের পাশাপাশি থেকে তাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছি। বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে আমরা ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচন করেছি, জাতীয় নির্বাচন করেছি। প্রত্যেকটা জায়গায়ই আলহামদুলিল্লাহ উত্তরোত্তর উন্নতি হচ্ছে।
রংপুর সিটি নির্বাচনের শুরু থেকেই দলটি তাদের প্রচারণায় আলাদা কৌশল নেয়। ভোটের দিনেও প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরের রাস্তা আর মোড়ে দলীয় প্রতীক হাতপাখা হাতে সক্রিয় ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, এই রাজনৈতিক তৎপরতাও তাদের দাওয়াতী কাজের অংশ।
ইসলামী আন্দোলন রংপুরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোষাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা এটা দাওয়াতী কাজ করছি।
এদিকে, দলটির নেতারা বলছেন, স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে দেশে ইসলামী রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন আনতে চান তারা।
রংপুর মহানগর ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবদুর রহমান ফারুকী বলেন, জামাতের সাথে আমাদের মূল পার্থক্য-স্বাধীনতায় বিশ্বাস।
চরমোনাই পীরের সংগঠনের এ নেতা আরও জানান, তাদের মূল লক্ষ্য- স্থানীয় পর্যায় থেকে সংগঠিত হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য শক্তি হয়ে ওঠা।
/এসএইচ
Leave a reply