মুন্সিগঞ্জে স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, পলাতক থাকা বন্ধুর বাবা-মা আটক

|

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:

মুন্সিগঞ্জ সদরে জেসিকা মাহমুদা (১৬) নামের এক স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তার বন্ধু বিজয় রহমানের বাবা-মাকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বিজয়ের বাবা মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান ও মা কানিজ ফাতেমা মনিকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এরআগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুমূর্ষু অবস্থায় জেসিকাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকদের কাছে ছাদ থেকে পরে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায় বিজয়। পরে গুরুত্বর অবস্থায় মুন্সিগঞ্জ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে রাত ৮টার দিকে মৃত্যু হয় জেসিকার। নিহত জেসিকা জেলা শহরের সরকারি এভিজেএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও সদর উপজেলার কেওয়ার এলাকার সেলিমের মেয়ে। সে মায়ের সাথে শহরের কোটগাঁও এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতো।

নিহতের পরিবারের দাবি, কোর্টগাঁও এলাকার বিজয় নামের ওই প্রতিবেশী বন্ধুর বাড়ির ছাদ থেকে জেসিকা পড়ে যাওয়ার কথা বললেও; তাকে ডেকে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

জেসিকার ভাই জিদান জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ি থেকে ঘুরতে বের হয় জেসিকা। সন্ধ্যা পর্যন্ত সে বাড়িতে ফেরেনি। পরে ৬টার দিকে হাসপাতাল থেকে এক বন্ধু ফোন করে জানায় জেসিকার অবস্থা খারাপ, সে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে। আমরা হাসপাতালে দৌড়ে আসার পর বিজয় চলে যায়। অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে সে মারা যায়। এটি হত্যাকাণ্ড। ওরা আমাদের বলছে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে, আর হাসপাতালে জানিয়েছে পড়ে গেছে। নিহতের মা বলেন, আমার মেয়েরে ডেকে নিয়ে অনেক নির্যাতন করে মেরে ফেলছে বিজয়। আমি এর বিচার চাই।

হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক জানান, সন্ধ্যায় ওই কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে একটি ২০-২১ বছরের ছেলে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছিল। পরে রাত ৮টার দিকে আবার মৃত অবস্থায় মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার মুখসহ শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ৫ তলার ছাদ থেকে পড়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি আমাদেরকে জানায় হাসপাতালে নিয়ে আসা ছেলেটি। তবে এমন ঘটনা হলে রোগীর মাথায় রক্তক্ষরণের চিহ্ন থাকতো, যা এই রোগীর ছিল না।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খাইরুল হাসান জানান, হাসপাতাল থেকে মরদেহ পেয়েছি। আইনগত কার্যক্রম ও তদন্ত চলছে। যারা হাসপাতালে নিয়ে এসেছে তারা ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি তারা বলছে তবে প্রকৃত ঘটনা কি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃত্যু না হত্যাকাণ্ড দুটি বিষয়ই দেখা হচ্ছে। নিহতের মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার সময় যারা ছিল তাদের খুঁজে বের করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে চেষ্টা চলছে।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply