পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ নিয়ে ভুল আর পুরানো তথ্য

|

নূরনবী সরকার:

পাঠ্যপুস্তকে বরাবরের মতো এবারও কিছু ভুল পাওয়া গেছে। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ সম্পর্কিত কিছু বিষয়ে ভুল আর পুরানো তথ্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া, মুদ্রণ ও কাগজের নিম্নমান নিয়েও রয়েছে অভিযোগ।

এবার পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও নবম-দশম শ্রেণির বইয়ে ভুল পাওয়া গেছে। পঞ্চমের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হচ্ছে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ কৃষি কাজ করে। বলা হচ্ছে, জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষিখাতের অবদান ২০ ভাগ। অথচ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, কৃষিতে জনশক্তির ৪০ ভাগ নিয়োজিত আর জিডিপিতে অবদান ১১ ভাগের কিছু বেশি।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা বইয়ে বলা হচ্ছে, ২৬শে মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী নির্যাতন শুরু করে। কিন্তু ইতিহাসের সত্য হল ২৫শে মার্চ কালরাত থেকে গণহত্যা শুরু করে পাকবাহিনী। একই বইয়ের দুইশ পৃষ্ঠায় আছে, বঙ্গবন্ধুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি সায়েম। সঠিক তথ্য প্রধান বিচারপতি নন, প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। এমন আরও ভুল রয়েছে বেশ কিছু পাঠ্যবইয়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ড. অধ্যাপক আকসাদুল আলম বলেন, আমাদের এখানে কপি-পেস্টের মতো করেই চলছে। আমাদের এখানে অদ্ভুত রকমের একটি কাণ্ড হয়, যেসব শিক্ষকেরা লিখেন তারা বলেন যে উনারা লিখেন নাই। কেননা আমাদেরকে সম্পাদনা করতে দেয়া হয়নি। কোথায় যেন সর্ষের ভেতের ভূত। এটা গভীর চিন্তার বিষয়। এই সম্পাদনাগুলো কারা করছেন, কাদের হাত থেকে প্রেসে যাচ্ছেন।

পাঠ্যপুস্তকে ভুল নতুন কিছু নয়। ভুল সংশোধন করার কথা বলছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ভুলগুলো সংশোধন করে পড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হবে বলেও জানান এনসিটিবি। পরিমার্জনের পরও ভুল থাকাকে দুঃখজনক বলছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, কিছু ভুল ধরা পড়েছে। আমরা এটি সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। ব্যাপক যদি হয়, আর না হলে কোথায় কী সংশোধনী আছে; বই যেমন যায় তেমন প্রত্যেক স্কুলে সংশোধনীপত্র হিসেবে প্রেরণ করি।

সব বই না পাওয়া আর কাগজ ও মুদ্রণ মান নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের দাবি, মান খুব একটা খারাপ হয়নি। আগামী বছর এসব বিষয়ে আরও যত্নবার হওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

করোনাজনিত বিধিনিষেধের কারণে দুই বছর পর এবার পাঠ্যপুস্তক উৎসব করেছে সরকার। তবে, অনেক শিক্ষার্থী সবগুলো বই হাতে পায়নি। কোথাও কোথাও একটি বইও দেয়া সম্ভব হয়নি।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply