আদালত অবমাননা: খুলনা জেলা প্রশাসক ও ডুমুরিয়া ইউএনও’র নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা

|

ডুমুরিয়ায় নদীর বুক থেকে অবৈধ ইটভাটা অপসারণ না করায় আদালত অবমাননার মামলায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন খুলনা জেলা প্রশাসক ও ডুমুরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা। আর, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হরি ও ভদ্রা নদীর বুকে গড়ে ওঠা ১৪টি অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল এর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রিটপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় গত ৭ ডিসেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসক ও ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আদালতে স্বশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) খুলনা জেলার সদ্য সাবেক প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার, বর্তমান জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন ও ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আসিফ রহমান আদালতে হাজির হন। এ সময় আদালতে এফিডেভিট দাখিল করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিটপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন- আদালতের আদেশ থাকার পরও ডুমুরিয়া উপজেলার হরি ও ভদ্রা নদীর বুক থেকে ১৪টি ইটভাটা সম্পূর্ণভাবে অপসারণের নির্দেশ থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

তখন বিবাদিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তি মালিকানায় কিছু জায়গা রেকর্ড থাকায় সেখান থেকে ইটভাটা উচ্ছেদ করা হয়নি।

জবাবে মনজিল মোরসেদ বলেন, যে সমস্ত জমি রেকর্ড করা হয়েছে তা নদীর জায়গা, সুতরাং নদীর জায়গায় ইটভাটা স্থাপন করা অবৈধ।

এ সময় আদালত জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধ এবং নদী ও পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসনের ভূমিকা থাকা জরুরি। জনগণের সেবক হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে নদীগুলো এভাবে দখল হয়ে যাবে।

পরিবেশ দূষণে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদসহ স্থানীয় ও বহিরাগত বেশ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন।

অভিযোগ আছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নদীর প্রবাহ রোধ করে তারা গড়ে তুলেছেন অবৈধ ইটভাটা। নদীর বুক দখল করে আবার নদীর মাটি কেটেই ইট তৈরি করে ব্যবসা করে আসছেন তারা। পরিবেশ দূষণের কোনো তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন কয়লা ও ভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ করছেন তারা। এতে নদীর দুই পাড়সহ আশপাশের কয়েক লাখ মানুষ বাধ্য হচ্ছেন বিষাক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে। অবিলম্বে এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান স্থানীয়রা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply