পাঠ্যবইয়ে তৃতীয় লিঙ্গের চেয়ারম্যান ঋতুর জীবনকথা

|

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

পাঠ্যবইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ঝিনাইদহের তৃতীয় লিঙ্গের ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু। নতুন জাতীয় পাঠ্যক্রমের সাধারণ শিক্ষা ও মাদরাসা বোর্ডের অধীন সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ছবিসহ ছাপা হয়েছে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের জীবন কাহিনী। তাতে এই জনগোষ্ঠীর নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। উঠে এসেছে ঋতুর কাহিনিও।

নজরুল ইসলাম ঋতু ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।

বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, জন্মের পর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে খুব অল্প বয়সে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে ‘গুরু মা’র কাছে চলে যেতে হয় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের। যেখানে বসবাস করা মানুষেরা একে অপরের সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে একটি পরিবারের মতো বসবাস করে। তারা শিশু আর নতুন বর-বউকে আশীর্বাদ করে টাকা উপার্জন করে। এই বিশেষ লিঙ্গের মানুষেরা স্বাভাবিক মানুষের মতো লেখাপড়া ও চাকরি করতে চাইলেও অন্যরা নিতে চায় না। পৃথিবীর অন্য দেশে ট্রান্সজেন্ডাররা স্বাভাবিক জীবনযাপন করলেও আমাদের দেশের চিত্র ভিন্ন। তবে, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়ে কাজ করছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তাদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

পাঠ্যপুস্তকে ঋতুর নাম আসায় গর্ব অনুভব করছেন এলাকাবাসী। এছাড়া নিজ এলাকার চেয়ারম্যানের ছবিসহ তাদের জীবন সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে পেয়ে খুশি এলাকার শিক্ষার্থীরাও। এদিকে, পাঠ্যবইয়ে স্থান করে নেয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন ঋতু-ও।

এ ব্যাপারে নজরুল ইসলাম ঋতু বলেন, পাঠ্যবইয়ে আমার ছবিসহ নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এটা আমার জন্য বিশাল পাওয়া। আমি অনেক খুশি হয়েছি। এই পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ আমার সম্পর্কে জানতে পারছে। আমার জন্য এর চেয়ে বড় পাওয়ার আর কিছু নেই। এছাড়া জনগণের উন্নয়নে সরকারের সহায়তাও কামনা করেন তিনি।

ঋতু উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের সন্তান। তার আরও তিন ভাই ও তিন বোন রয়েছে। তিন ভাই ঢাকায় থাকেন। বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। জন্মের পর তৃতীয় লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাওয়ায় মাত্র সাত বছর বয়সে তাকে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যেতে হয়।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply