‘শনিবার বিকেল’ নিয়ে ষড়যন্ত্র কোথা থেকে হয়েছে? ফারুকীর ক্ষোভ

|

গুলশানের হোলি আর্টিজানের ঘটনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সিনেমা ‘ফারাজ’ মুক্তি পাচ্ছে ৩ ফেব্রুয়ারি। অথচ একই ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’ এখনও আটকে আছে সেন্সরে। বিদেশে সিনেমাটির প্রদর্শনী হলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র না মেলায়, দেশের দর্শক সিনেমাটি দেখার সুযোগ পাননি এখনও। যা নিয়ে শোবিজ টুনাইটের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিনেমাটির নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।

‘শনিবার বিকেল’র নির্মাতা প্রখ্যাত পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের অন্যান্য দফতর সিনেমাটির স্ক্রিপ্ট পড়ে অনুমোদন দিয়েছিল। ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি সেন্সর বোর্ড ছবিটি দেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছে, এটা একটা অসাধারণ ও বাংলাদেশের জন্য জরুরি ছবি, আমরা দ্রুত সার্টিফিকেট দিচ্ছি। এখন, এই ছবির পেছনে ষড়যন্ত্র কোথা থেকে হয়েছে?

২০১৯ সালে ১৫ সদস্যের সেন্সর বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে সিনেমাটি প্রদর্শনের উপযোগী নয় বলে মত দেয়। সেই সাথে কিছু দৃশ্য সংযোজন করতে বলা হয়। ২০২০ সালে তা সংশোধনও করা হয়। তবে বছরের পর বছর চলে গেলেও, এখনও কোনো আশার বাণী শোনা যায়নি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী বলেন, যে কমিটি ছবিটি দেখে বলেছিল অসাধারণ, তাদেরকে কারা এই ছবিটি মুক্তি না দেয়ার ব্যাপারে বাধ্য করলো! সাধারণত সেন্সর বোর্ড ডায়লগ বা অ্যাকশনের কথা উল্লেখ করে জানায় যে, তা পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু তা না করে বলা হলো, এই ছবি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড সিনেমাটি আটকে রেখে ‘অন্যায্য’ আচরণ করছে বলে অভিযোগ তুলে, গত বছরের নভেম্বরে ১২৯ জন সাংস্কৃতিক কর্মী তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন। এদিকে একই ঘটনা নিয়ে ভারতে নির্মিত ‘ফারাজ’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি। খবরটি প্রকাশের পর আরও বেশি হতাশ ও ক্ষুব্ধ ফারুকী। তাই এক প্রকার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যটাস দিয়ে জানান, আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ‘শনিবার বিকেল’ দর্শকের সামনে হাজির করতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন তুমুল আলোচনা চলছে; এর মধ্যেই ২১ জানুয়ারি সিনেমাটি নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপিল কমিটির শুনানির দিন ধার্য করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। কেন এই শুনানি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নির্মাতা। মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী বলেন, আমি আশা করেছিলাম, আমাদের একটি সংশোধনীর তালিকা দেয়া হবে। তা না করে কেন আবার শুরুর দিকে চলে গেলো যে, আবার আপিল কমিটি মিটিংয়ে বসবে! এটা কেন হলো আমরা বুঝতে পারলাম না।

ইতোমধ্যেই মস্কো ও টরন্টোসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘শনিবার বিকেল’র প্রদর্শন হয়েছে। বিভিন্ন দেশের নির্মাতা-সমালোচকদের প্রশংসার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে সিনেমাটি নিয়ে ইতিবাচক প্রসঙ্গ। কিন্তু দেশে কোনো সিনেমা মুক্তি নিয়ে যে এত প্রতিবন্ধকতা, সেখান থেকে উত্তরণের উপায় কী?

মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী বলেন, একটাই উপায় যা নিয়ে ফিল্ম অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ কথা বলছে, সেন্সর ও ওটিটি নীতিমালা ঢেলে সাজাতে হবে। দেশের ভাবমূর্তি বা, ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা রাখলে সেই বিধিটি পরিষ্কার করতে হবে; সংজ্ঞা সুনির্দিষ্ট করতে হবে। কোনো ঝাপসা আইন রাখা যাবে না।

আরও পড়ুন: ভারতে মুক্তি পাচ্ছে আলোচিত সিনেমা ‘ফারাজ’

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply