দুর্দান্ত আর্সেনাল, দুর্বার আর্সেনাল, অপ্রতিরোধ্য আর্সেনাল এসব বিশেষণই প্রাপ্য মিকেল আরতেতার শিষ্যদের। নর্থ লন্ডন ডার্বিতে টটেনহ্যামকে পাত্তাই দেয়নি গানাররা। স্পার্সের মাঠে গত ৯ বছর ধরে নর্থ লন্ডন ডার্বিতে জয়হীন ছিল গানাররা কিন্তু সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ। মার্টিন ওডিগার্ডের অতিমানবীয় পারফরমেন্সে টটেনহ্যামের মাঠে ২-০ গোলে জয় পেয়েছে আর্সেনাল।
চলতি মৌসুমের গত ম্যাচে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের কাছে পয়েন্ট খোয়ানো আর্সেনাল ফের জয়ে ফিরলো। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে এগিয়ে গেল ৮ পয়েন্টের ব্যবধানে।
টটেনহ্যাম হটস্পার্স স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই টটেনহ্যামকে চেপে ধরেছিল আর্সেনাল। গোলও পেয়ে যায় খুব শিগগিরই। গোলকিপার উগো লরিসের ভুলেই এগিয়ে যায় গানাররা। মার্টিন ওডেগার্ডের গতির শট ফেরাতে গিয়ে হাত ফসকে গোল বল জালে জড়িয়ে ম্যাচের ১৪ মিনিটে এগিয়ে যায় গানাররা।
মিকেল আরতেতার কৌশলের সামনে টটেনহ্যাম ছিল অসহায়। গত মৌসুমে টটেনহ্যামের সঙ্গে হেরেই আর্সেনালের শীর্ষ চার-এ থাকা হয়নি। কোচ আরতেতা সেটি মাথায় রেখেই আজ কৌশল সাজিয়েছিলেন। গত মৌসুমের ভুল-ত্রুটিগুলো শুধরেই আজ টটেনহ্যামের বিপক্ষে ঝাঁপিয়েছে আর্সেনাল।
কোণঠাসা টটেনহ্যাম প্রথমার্ধে একবারই শট লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয়নি। ম্যাচের ১৮ মিনিটে সেসেগননের পাসে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সন হিউং-মিন, কিন্তু তার জোরাল শট কোনো মতে পা দিয়ে আটকে আর্সেনালের ত্রাতা গোলরক্ষক অ্যারন র্যামসডেলে।
২৫-তম মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে থেকে টমাস পার্টির বুলেট গতির ভলি গোলপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। তবে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ ধরে রেখে ৩৬তম মিনিটে ঠিকই ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্সেনাল। প্রিমিয়ার লিগে নভেম্বর-ডিসেম্বরের সেরা খেলোয়াড় গানার অধিনায়ক মার্টিন ওডিগার্ডের ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া নিচু জোরাল শটে ঝাঁপিয়ে পড়েও নাগাল পাননি লরিস। যার ফলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্সেনাল।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে হ্যারি কেইনের ফ্লিক হেড র্যামসডেলে ফেরালে ২-০ গোলে এগিয়ে চালকের আসনে থেকে বিরতিতে যায় আর্সেনাল।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া টটেনহ্যাম একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে। কিন্তু ৫০তম মিনিটে কেইনের শট ফিস্ট করে, একটু পর সেসেগননের শট পা দিয়ে আটকে দেন র্যামসডেলে। ম্যাচের ৬৯তম মিনিটে ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার সুযোগ আসে আর্সেনালের সামনে। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে জাকার বাড়ানো পাস ধরে লরিসের গায়ে মেরে নষ্ট করেন এনকেটিয়া।
একটু পর আক্রমণের গতি বাড়াতে ম্যাট ডোহার্টিকে তুলে রিশার্লিসনকে নামান স্পার্স কোচ আন্তোনিও কন্তে। ৮১তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের কোনাকুনি শট জমে যায় র্যামসডেলের গ্লাভসে। বাকিটা সময়ে রিশার্লিসন কিংবা কেইন কেউই পারেননি আর্সেনালের জমাট রক্ষণে চিড় ধরাতে।
এই জয়ে ১৮ ম্যাচ খেলে আর্সেনালের পয়েন্ট এখন ৪৭। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির সমানসংখ্যক ম্যাচে ৩৯। তৃতীয় স্থানে থাকা নিউক্যাসল ইউনাইটেড অবশ্য ম্যাচ খেলেছে একটি বেশি, তাদের পয়েন্ট ৩৮। চতুর্থ স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরও পয়েন্ট ৩৮। ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে টটেনহ্যাম।
/আরআইএম
Leave a reply