রংপুরের কাছে ৪ উইকেটে হেরে বরিশালের বিদায়

|

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এলিমিনেটর ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছে ৪ উইকেটে হেরে চলতি আসর থেকে বিদায় নিয়েছে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। মেহেদী মিরাজের ফিফটিতে ১৭০ রানের জবাবে শামীম পাটোয়ারীর অনবদ্য ৭১ রানের ওপর ভর করে ৩ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রংপুর।

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন এলিমিনেটর ম্যাচে টস জিতে বরিশালকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠান রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লে’তে মোটামুটি ভালো শুরু পায় বরিশাল। পাওয়ার প্লে’তে বরিশাল ৪৬ রান তুলতে সক্ষম হয়। এর বেশিরভাগই রানই আসে মিরাজের ব্যাট থেকে। মাত্র ১৯ বলে ৩৪ রান করে পাওয়ার প্লে’তে অপরাজিত থাকেন তিনি। অন্যদিকে ফ্লেচার আউট হন ১৬ বলে ১২ রান করে। ৩ নম্বরে ব্যাট করতে আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

রিয়াদকে সঙ্গী করে এরপর খুব দ্রুত ৬৯ রানের জুটি গড়েন মিরাজ। এরমধ্যে মিরাজ ৩৫ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন। মাহমুদউল্লাহ ১টি ছয় আর ৪টি চারের সাহায্যে খেলেন ২১ বলে ৩৪ রানের দারুণ এক ইনিংস। দলীয় ১১৫ রানে দাসুন শানাকার বলে মাহমুদউল্লাহ ফিরলে ভাঙে এই জুটি।

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াদের বিদায়ের পর বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ফেরেন মিরাজও। আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৯টি চার ও ১টি ছয়ে ৬৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন এই ব্যাটার। রিয়াদের মতো মিরাজের উইকেটটিও নেন শানাকা। মিরাজের বিদায়ের পর মাঠে নামেন লঙ্কান হার্ডহিটার ভানুকা রাজাপাকসে।

তবে দুইজনে স্লগ ওভারের সময় মাঠে নামলেও ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে ব্যর্থ হন। ১৬ এবং ১৭- এই দুই ওভার থেকে দুই ব্যাটার তুলতে পারেন মাত্র ৯ রান। অবশেষে ১৮তম ওভারে এসে শানাকার ওভার থেকে জানাত ১টি করে চার-ছয়ে ১৪ রান তোলেন। তবে পরের ওভারে ডোয়াইন ব্রাভো এসে দেন মাত্র ৬ রান।

হাসান মাহমুদের করা শেষ ওভার থেকে ১৫ রান নেয়াতে বরিশালের স্কোর ১৭০ স্পর্শ করে। জানাত ২৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্য প্রান্তে রাজাপাকসে ১টি করে চার-ছয়ে ১০ বলে করেন ১৭ রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন দাসুন শানাকা। এছাড়া রাকিবুল হাসান ৩২ রানের বিনিময়ে নেন ১টি উইকেট।

ছবি: সংগৃহীত

১৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই নাইম শেখের উইকেট হারায় রংপুর। সাকিব আল হাসানের করা ইনিংসের ১ম ওভারের ৫ম বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে প্রিটোরিয়াসের হাতে ধরা পড়েন। ৩ নম্বর ব্যাটার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন শামীম পাটোয়ারী। ওপেনার রনি তালুকদারকে সঙ্গী করে ৬১ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান শামীম।

কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস সাজান রনি। রনি তালুকদার ফিরলে মাঠে নামেন অধিনায়ক সোহান। ১৮ রান করে আউট হয়ে ফেরেন রংপুরের অধিনায়ক। ব্যাট হাতে এদিন ব্যর্থ ছিলেন আইএল টি-টোয়েন্টি খেলে আসা নিকোলাস পুরান। মাত্র ৫ রান করে ফেরেন তিনিও। তবে, একপ্রান্তে ঠিকই রানের গতি সচল রাখেন শামীম। ৩৬ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছয়ে ফিফটি তুলে নেন এই বামহাতি ব্যাটার। খালেদ আহমেদের বলে আউট হওয়ার আগে ৭১ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন শামীম। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি শামীমের সেরা ইনিংস। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল মাত্র ৫২ রান।

ছবি: সংগৃহীত

শামীম ফিরলে কিছুটা বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। ডোয়াইন ব্রাভো ফেরেন মাত্র ২ রান করে। তবে দাসুন শানাকা ১৫ এবং শেখ মেহেদী ৯ বলে ১৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর রাইডার্স।

বরিশালের পক্ষে অধিনায়ক সাকিব মাত্র ২৭ রানের বিনিময়ে নেন ২ উইকেট। এ ছাড়াও ২টি করে উইকেট পেয়েছেন সৈয়দ খালেদ এবং কামরুল ইসলাম রাব্বীও। এরমধ্যে খালেদ খরচ করেন ২৩ রান এবং রাব্বী দেন ৩৩ রান।

এই জয়ের ফলে কোয়ালিফায়ার টু’তে উঠলো রংপুর রাইডার্স। ১৪ ফেব্রুয়ারি সেই ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে খেলবে কোয়ালিফায়ার ওয়ানের পরাজিত দল।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply