ফিফা পুরস্কারে আমার নাম থাকা অবিশ্বাস্য; বর্ষসেরা গোলের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ওলেকসি

|

ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রিচার্লিসনের ওভারহেড কিকের গোলে চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল ফুটবল দুনিয়ার। বিশ্বকাপের সেরা গোলের স্বীকৃতি তো বটেই, বিশ্বকাপ মাতানো গোলটি মনোনয়ন পেয়েছে ফিফা বর্ষসেরা গোলের সংক্ষিপ্ত তালিকায়। তবে রিচার্লিসনের সেই নজরকাড়া গোলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে আরেকটি বাইসাইকেল কিকের গোল। গোলটি করেছেন এক পায়ের এক ফুটবলার। নাম মার্সিন ওলেকসি। ৩৬ বছর বয়সী পোলিশ এই ফুটবলার খেলেন অ্যাম্পিউটি ফুটবল খেলা এই ৩৬ বছর বয়সী পোলিশের কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে এই স্বীকৃতি। তার কাছে, পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের সংক্ষিপ্ত তালিকায় তার নাম থাকাটাই রীতিমত অবিশ্বাস্য ব্যাপার।

ছবি: সংগৃহীত

মার্সিন ওলেকসির নামটা কিছুটা অপরিচিত ঠেকতে পারে। জানিয়ে রাখা ভালো, এক পায়ের এই ফুটবলার খেলেন অ্যাম্পিউটি ফুটবল। আর এই ফুটবল হচ্ছে, যাদের একটি পা নেই এমন শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের খেলা। গোলরক্ষক হিসেবে খেলেন তারাই, যাদের একটি হাত নেই। ফুটবলাররা ছোটেন ক্রাচে ভর করে কিন্তু, খেলতে হয় এক পা দিয়ে।

মার্সিন ওলেকসি পোল্যান্ডের অ্যাম্প ফুটবল দল ওয়ার্তা পোজনানের হয়ে খেলেন। গত ৭ নভেম্বর ঘরোয়া টুর্নামেন্টে স্তিল সেজজোর বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে দুর্দান্ত এক গোল করেন ওলেকসি। গোলটি ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছে। বাকি দুটির একটি রিচার্লিসনের, অন্যটি ইউরোপা কনফারেশনস লিগে থিসালোনিকির বিপক্ষে করা মার্শেইয়ের দিমিত্রি পায়েতের গোল। ১৯৮৫ সালে চালু হওয়া অ্যাম্প ফুটবলের কোনো গোল এই প্রথম ফিফার বর্ষসেরা গোলের তালিকায় মনোনয়ন পেলো।

একসময় রিচার্লিসনদের মতোই সুস্থ স্বাভাবিক ছিলেন ওলেকসি। গোলরক্ষক হিসেবে পোল্যান্ডের তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের প্রতিযোগিতাতেও খেলেছেন তিনি। কিন্তু ২০১০ সালের এক সড়ক দুর্ঘটনা তাকে স্বাভাবিক জীবন থেকে ছিটকে দেয়। রাস্তার পাশে কাজ করার সময় দ্রুতগতির একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়। একটি পা কেটে ফেলতে হয় ওলেকসির।

মনের জোর আর স্বজনদের সহায়তায় এক পা নিয়েই আবার ফুটবলে ফিরেছিলেন ওলেকসি। ইতিহাসের প্রথম অ্যাম্প ফুটবলার হিসেবে ফিফা বর্ষসেরা গোলদাতার পুরস্কারে নিজের নাম দেখে হতবাক তিনি। ওলেকসি বলেন, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে ফিফা পুরস্কারে আমার নাম আছে। মনে হচ্ছে ঘোরের মধ্যে আছি। অ্যাম্প ফুটবল আমাকে শুধু ফুটবলই ফিরিয়ে দেয়নি, দ্বিতীয় জীবনও দিয়েছে।

আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি জুরিখে পুসকাস অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করবে ফিফা। সেরা তিনজন উপস্থিত থাকবেন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply