দ্বিতীয় সন্তানকে স্বীকার করেন না নওয়াজ, দাম্পত্য কলহ চরমে

|

ছবি: সংগৃহীত

চরমে উঠেছে বলিউড অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর দাম্পত্য কলহ। এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়ে দ্বিতীয় সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানালেন তার স্ত্রী আলিয়া সিদ্দিকি। অভিযোগ, নিজের সন্তানের পিতৃপরিচয় দিতে রাজি নন নওয়াজ! তাকে নিজের সন্তান বলে গ্রহণও করছেন না অভিনেতা। তাই, বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন স্ত্রী আলিয়া।

কয়েক বছর ধরেই বলিউড অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী আলিয়া সিদ্দিকীর সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছে না। ২০২০ সালে স্বামীর বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন আলিয়া, অবশ্য এক বছর পরই তা প্রত্যাহার করেন তিনি। ২০২২ সালে আবারও তাদের সংসারে ভাঙনের সুর। এবার মুখ খোলেন আলিয়া। জানান, নওয়াজ তাদের দ্বিতীয় সন্তানকে নিজের সন্তান বলে মনেই করেন না।

এর আগে, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর মা অভিযোগ করেছিলেন, আলিয়ার দ্বিতীয় সন্তান নওয়াজউদ্দিনের বায়োলজিক্যাল সন্তান নয়। এ পরিস্থিতিতে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছেন আলিয়া। এর আগেও ডিএনএ টেস্টের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন তিনি। এবার পারিবারিক আদালতে আপিল করলেন।

চলতি বছরের শুরুতেই নওয়াজ-আলিয়ার বৈবাহিক সম্পর্ক ক্রমেই অবনতির দিকে যায়। নওয়াজের মায়ের সঙ্গে স্ত্রী আলিয়ার বিবাদ এতোটাই চরমে উঠেছে যে, এ বলিউড তারকা এখন নিজের বাসা ছেড়ে হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। বিবাদ না থামা পর্যন্ত বাসা থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত তার।

কিছুদিন আগেই নওয়াজের মা মেহরুন্নিসা সিদ্দিকী পুত্রবধূর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে ভারসোবা পুলিশ নওয়াজের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল থানায়। এরপর, আলিয়াও আর চুপ করে বসে থাকেননি। নওয়াজের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছেন তিনিও। গত সপ্তাহে আলিয়ার আইনজীবী এক বিস্ফরক অভিযোগ করেন যে, সাতদিন নওয়াজ তার স্ত্রীকে অভুক্ত রেখেছেন, এমনকি বাথরুমে পর্যন্ত যেতে দেননি।

সম্প্রতি, ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাম্পত্য জীবনের নানা বিষয় শেয়ার করেছেন আলিয়া সিদ্দিকী। ক্যাপশনে লিখেছেন, ২০০৪ সালে নওয়াজের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয়। সে সময় লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন তারা। মুম্বাইয়ের একতা নগরে এক কামরার একটি বাড়িতে থাকতেন আলিয়া-নওয়াজ ও তার ভাই শামসুদ্দিন।

ওই পোস্টে নওয়াজের সাথে বিয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে আলিয়া সিদ্দিকী বলেন, ২০১০ সালে আমরা বিয়ে করি। পরের বছর আমি সন্তানের জন্ম দিই। প্রসব সংক্রান্ত খরচের জন্য আমার মায়ের দেয়া ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিই। অবশিষ্ট টাকা দিয়ে নওয়াজকে একটা গাড়ি কিনে দিয়েছিলাম। এতোগুলো বছর পর ওই মানুষটা বদলে গেছে, পুরোপুরি অমানুষে পরিণত হয়েছে।

তবে নওয়াজউদ্দিনের দাবি, প্রথম সন্তান জন্মের পরই আলিয়াকে ডিভোর্স দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে আলিয়া ফের নওয়াজের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। লিভ-ইনে থাকাকালীন তাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়।

এর জবাবে  আলিয়া জানিয়েছেন, আমি যখন ওর স্ত্রী ছিলাম তখনো ও আমাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এ অভিযোগগুলো খুব খারাপ এবং অসম্মানজনক। আমার এসব কথা বলার কারণ একটাই, মানুষটা এতো নিচে নেমে গেছে, এখন আমি তার আসল রূপ দেখাতে চাই। প্রতারক যেকোনো ধর্মের মানুষই হতে পারে। সবাইকে অনুরোধ ধর্ম দিয়ে মানুষ বিচার করবেন না।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে নওয়াজউদ্দিন-আলিয়ার সম্পর্কে চিড় ধরে বলে জানা যায়। তারপর থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন তারা। ২০২০ সালের মে মাসে নওয়াজউদ্দিনের নামে ডিভোর্সের মামলা ঠোকেন আলিয়া। পরের বছরই সুর বদলে সে মামলা প্রত্যাহার করেনও তিনি এবং জানান, নওয়াজের সাথে সংসার করতে আগ্রহী তিনি। তবে, গত বছরের শেষের দিকে আবারও তাদের দাম্পত্য কলহের খবর সামনে আসে। ভক্তদের প্রত্যাশা, সব মান-অভিমান ভুলে নিজের সন্তানদের জন্য আবারও একসাথে হবেন এই তারকা জুটি। 

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply