স্নায়ুযুদ্ধের সময় পারমাণবিক হামলা থেকে বাঁচতে ডেনমার্কে বানানো হয়েছিল বিশেষ বাঙ্কার। তৎকালীন রাজপরিবার, সরকার ও দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য যা তৈরি করা হয়েছিল।
প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য দীর্ঘদিন কঠোর গোপনীয়তার সাথে বাঙ্কারটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। ২০১২ সালে বাঙ্কারটি ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তের পর এটির কথা প্রকাশ করে ডেনিশ সরকার। সবশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বাঙ্কারটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির রাজধানী কোপেনহেগেন থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত এক গ্রামে পাহাড়ের নিচে নির্মাণ করা হয় বাঙ্কারটি। সামরিক জোট ন্যাটোর চাপে ওই সময় এটি নির্মাণ করে ডেনিশ সরকার। সাড়ে পাঁচ হাজার স্কয়ার মিটারের অবকাঠামোটি তৈরি করতে লেগে যায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময়। ১৯৬৮ সালে শেষ হয় নির্মাণকাজ। বাঙ্কার থেকেই যাতে গোটা দেশ পরিচালনা করা যায়, ছিল সেই ব্যবস্থা।
রিগান ভেস্ট বাঙ্কারের তত্ত্বাবধায়ক উল্লা ভার্নকে এগেস্কোভ বলেন, তৎকালীন সরকার ভেবেছিল, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন। আর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা ছিল প্রবল। এ কারণেই পরমাণু হামলা থেকে বাঁচতে পাহাড়ের ভেতর বাঙ্কারটি তৈরি করা হয়। সরকার ও রাজপরিবারের নিরাপত্তায় এটি বানানো হয়। বাঙ্কারটি অন্তত ৩৫০ জন মানুষের বসবাসের উপযোগী।
২০১২ সালে ডেনমার্ক সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত এর অস্তিত্ব অজানা ছিল স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছেও। সম্প্রতি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে এই স্থাপনা।
জেস্পার আরবো ফ্রেদেরিকসেন নামের এক দর্শনার্থী বলেন, অতীত পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা নেয়া আমাদের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। স্নায়ুযুদ্ধের সময় মানুষ কী ভেবেছিল, পূর্ব ইউরোপের বর্তমান যুদ্ধের সাথে সেটির তুলনা জরুরি। তাহলে হয়তো আমরা ভয়াবহতা বুঝতে পারবো।
বাঙ্কারের ভেতর এখনও সব আসবাবপত্র আছে আগের মতোই। হাসপাতাল, ক্যাফেটেরিয়া থেকে কেবিনেট রুম সবই ছিল এতে। যদিও এগুলো কখনও ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি।
/এমএন
Leave a reply