জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১ নিয়ে চলছে বিতর্ক

|

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি প্রদান করা হয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার ২০২১।  তবে বরাবরের মতো এবারও সমালোচনা পিছু ছাড়েনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে। এবার সমালোচনা হয়েছে আজীবন সম্মাননা আর কম যোগ্যতা সম্পন্ন সিনেমা- অভিনয়শিল্পী ঘিরে। সমালোচনা হয়েছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায়ও ঘুরেফিরে একই মুখ ও ক্ষমতাধর তারকাদের অংশগ্রহণ নিয়েও।

বাংলাদেশে সিনেমার সবচেয়ে সন্মানজনক পুরস্কার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তবে শুরু থেকেই এ পুরস্কার ঘিরে রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এবার আজীবন সন্মাননা দেয়া হয়েছে যৌথভাবে ইলিয়াস কাঞ্চন ও ডলি জহুরকে। সমালোচনার শুরু এখানেই। অভিযোগ উঠে চলচ্চিত্রের যোগ্যতার দৌড় বিবেচনা না করেই দেয়া হয়েছে এ পুরস্কার।   

এ প্রসঙ্গে অভিনেয় শিল্পী ডলি জহুর বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোনো মতামত জানাতে চাই না। কারণ, প্রত্যেকটা মানুষের বাক স্বাধীনতা আছে, মতামত জানানোর অধিকার আছে। কেউ মতামত জানাতেই পারে। যদি কেউ বলে থাকে তাহলে তিনি তার নিজস্ব মতামতই জানিয়েছেন। দর্শক যদি আমাকে পছন্দ করেন তাহলে আমার পুরস্কার পাওয়াটা স্বার্থক। আর দর্শক পছন্দ না করলে মনে হবে যে আমি জোর করে এ পুরস্কার আদায় করেছি।

এবারের আসরে শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীসহ সাতটি পুরস্কার জিতে নিয়েছে ‘নোনাজলের কাব্য’সিনেমাটি। এ নিয়েও শোনা গেছে নানা গুঞ্জন। তবে, সিনেমার পরিচালক জানালেন ভিন্ন কথা। 

এ প্রসঙ্গে নোনা জলের কাব্য সিনেমার পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বলেন, আন্তর্জাতিক ফান্ড আমরা পেয়েছি। বড় বড় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও প্রদর্শনীতে আমাদের সিনেমা দেখানো হয়েছে। তাহলে আপনাদের কী মনে হয় যে আমরা সেখানেও কারও আনুকূল্য পেয়েছি? লন্ডন, বুসানেও শো করেছি। সবাইকে আমি ছবিটি দেখার আমন্ত্রণ জানাতে চাই।

এদিকে, আজমেরী হক বাঁধন অভিনীত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমাটি ছিনিয়ে এনেছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা বাঁধনেরও অভিযোগ, এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সঠিক মূল্যায়ন হয়নি।  

অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, আম অবশ্যই সম্মানীত ও আনন্দিত। আবার একইসাথে লজ্জিত-দুঃখিতও। আমি ভেবেছিলাম যে বাংলাদেশে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’কে আরও সম্মানীত করা হবে, সিনেমাটি আরও সমাদৃত হবে। পুরো ব্যাপারটা আমি যেরকম আশা করেছিলাম সেরকমটা হয়নি।

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব ও কৈশোর নিয়ে নির্মিত ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই সিনেমাটি মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ সম্মাননা পেলেও সিনেমাটির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

বিগত বছরে ২৮টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হলেও এবার দেয়া হয়েছে ২৭টি ক্যাটাগরীতে ৩৪টি পুরস্কার। বাদ দেয়া হয়েছে শ্রেষ্ঠ নৃত্যপরিচালক ক্যাটাগরি। আর, তাতেই ক্ষুব্ধ নৃত্য পরিচালকরা।

পুরস্কারের পাশাপাশি আসন বিন্যাস নিয়েও সমালোচনা ছিল এবারের পুরস্কার প্রদান আয়োজনে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিল প্রায় একই মুখ। ক্ষমতা সম্পন্ন তারকাদের অংশগ্রহণ নিয়েও শোনা গেছে নানা গুঞ্জন।

বাংলাদেশের সিনেমার সবচেয়ে সন্মানজনক পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের প্রক্রিয়া হবে আরও স্বচ্ছ, ত্রুটি মুক্ত। তবেই এ পুরস্কার অনুপ্রেরণা জোগাবে সৃষ্টিতে। প্রকৃত শিল্পী পাবেন তার সন্মান। অবসান হবে সব গুজন আর বিতর্কের। কিন্তু, সেদিন কবে?

/এসএইচ             


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply