জোরপূর্বক নগ্ন ছবি ধারণ: গৃহবধূর আত্মহত্যা

|

স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর:

নাটোরের বড়াইগ্রামে মিথ্যা অপবাদে শিপ্রা কস্তা (৩০) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সরাবাড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় শিপ্রার দায়ের করা অভিযোগপত্রটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

বড়াইগ্রাম থানায় দায়েরকৃত অভিযোগপত্র ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাস বলেন, নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের সরাবাড়িয়া গ্রামে ডমিনিক রোজারিওর স্ত্রী শিপ্রা কস্তা (৩০) তার বাড়ির পাশের দোকানি আলম ফকির ও শাহ আলমের দোকানে নিয়মিত জিনিসপত্র ক্রয় করতেন।

গত ১৭ জুলাই রাত ৯ টার দিকে দোকানি শাহ আলম শিপ্রার বাড়িতে পাওনা টাকা আদায় করতে যায়। এসময় আলম ফকির, সবুজ সরকার ও আবু হানিফ শিপ্রার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে শিপ্রা ও শাহ আলমের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ তোলে।

একপর্যায়ে তারা লাঠি দিয়ে শিপ্রা ও শাহ আলমকে বেধড়ক মারধর করে। এছাড়া ওই বখাটেরা তাদের দুজনকে জোরপূর্বক নগ্ন করে মোবাইল দিয়ে ছবি ধারণ করে শিপ্রার কাছ থেকে একটি স্বর্ণের চেইন ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।

এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাদের নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা। এ ঘটনায় শিপ্রা থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করে। অভিযোগ দায়েরের পর ওই বখাটেরা ক্ষিপ্ত হয়ে শিপ্রার নগ্ন ছবি বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শন করতে থাকে।

এ ঘটনায় গৃহবধূ শিপ্রা গত মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে শিপ্রার স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রটি ঘটনার ২১ দিন পর গতরাতেই থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার সকালে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।

শিপ্রার বাবা কুটি কস্তা জানান, ‌‌‌তিন বখাটে আমার মেয়ের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছিল। এজন্য আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

অভিযোগ দায়েরের কথা অস্বীকার করে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাস জানান, ঘটনাটি মৌখিকভাবে শুনে ভুক্তভোগীদের মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। তারা মামলা করতে রাজি হয়নি। শিপ্রার লিখে রাখা অভিযোগপত্রটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

যমুনা অনলাইন: কেআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply