রিমন রহমান:
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ কৃচ্ছতা সাধনই এর কারণ বলে মনে করছে ন বিশ্লেষকরা। এই অবস্থায় রাজস্ব খাত সংস্কারে আইএমএফের শর্তপূরণে নতুন করদাতা খুঁজে বের করার ওপর জোর দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে অটোমেশনের তাগিদ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরাও।
সরকারের অভ্যন্তরীণ আয়ের সিংহভাগই যোগান দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। জনগণের দেয়া মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট, আয়কর এবং শুল্ক থেকেই আসে রাজস্ব। সরকারের এই আয় বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগের কথা বলা হলেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ছে না আয়। চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় হলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ ভাগের বেশি। প্রশ্ন হচ্ছে কেন বাড়ছে না রাজস্ব আদায়?
এ নিয়ে ডিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, অটোমেশন হলে দুর্নীতি, হয়রানি আর কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কম হয়ে যাবে। এত সুবিধার পরও এই অটোমেশনের বিরোধীতা করছে কারা তা খুঁজে বের করার তাগিদও দেন তিনি।
আমদানি-রফতানি খাতে সাত মাসে যে রাজস্ব লক্ষ্য ধরা হয়, তার চেয়ে কম আদায় হয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। আর ভ্যাট থেকে আদায় কম হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে রাজস্ব খাত সংস্কারে বেশ কয়েকটি শর্ত দেয় আইএমএফ। কিন্তু সেই শর্ত পরিপালনে অগ্রগতি কতোটুকু?
এই প্রশ্নের উত্তরে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, পদ্ধতিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াকে রিফর্ম করার প্রয়োজন হয়। সেই প্রক্রিয়ায় ২-৩ বছর লেগে যেতে পারে। তবে এই বাজেটে সরকারের পক্ষে সেই রিফর্ম করা প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ২৪ শতাংশ। কিন্তু জুলাই-জানুয়ারি সময়ে শুল্ক-কর আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১০ ভাগ। অর্থবছরের বাকি কয়েক মাসে কীভাবে রাজস্ব বাড়ানো যাবে সে বিষয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমদানি বাড়াতে হবে। নতুবা অর্থনীতির চাকা ঘুরবে না, রাজস্বও আসবে না।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে এনবিআরের জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছে সরকার।
এসজেড/
Leave a reply