ক্রমেই বাড়ছে চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা। তাইওয়ানের চারদিকে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন। থেমে নেই তাইওয়ানও। তারাও দেখাচ্ছে নিজেদের শক্তিমত্তা। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধের শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। যদিও সামরিক শক্তিতে বেইজিংয়ের চেয়ে যোজন যোজন দূরে তাইপের অবস্থান। একসময়ে চীনের অংশ থাকলেও এখন নিজেদের সার্বভৌম রাষ্ট্র দাবি করে তাইওয়ান।
১৭ শতকে চীনের অংশ ছিলো তাইওয়ান। ১৮৯৫ সালে প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেয় টোকিও। পরে অবশ্য দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে জাপান হেরে গেলে আবারও বেইজিংয়ের দখলে আসে প্রশান্ত মহাসগারের দ্বীপটি। যদিও দীর্ঘদিন ধরে তাইয়ান নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র দাবি করে আসছে। আর এ ইস্যুতে গেল সাত দশক ধরেই চীন-তাইওয়ানের সম্পর্কে চলছে টানাপোড়েন।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর সে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। আকাশ ও নৌ পথে দ্বীপটির চারদিক দিয়েই সামরিক মহড়া চালাচ্ছে বেইজিং। ফলে তৈরি হয়েছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। এদিকে তাইপের কড়া হুঁশিয়ারি, নিজ ভুখণ্ডে হামলা হলে দেয়া হবে মোক্ষম জবাব। এ অবস্থায় সংঘাতের শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না আন্তর্জাতিক মহল।
দুই দেশের এই উত্তেজনা যদি যুদ্ধে রূপ নেয় তবে বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তিধর চীনের সামনে কতটা লড়াই করতে পারবে তাইওয়ান? দ্যা মিলিটারি ব্যালেন্সের তথ্যমতে, সামরিক সক্ষমতায় বেইজিংয়ের তুলনায় তাইপেকে নগণ্যই বলা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পর সামরিক খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় শি জিন পিংয়ের দেশের। তাদের সামরিক বাজেট ২৯৩ বিলিয়ন ডলার; অন্যদিকে এ খাতে তাইওয়ানের বাজেট মাত্র ১৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। চীনের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। যেখানে তাইওয়ানের মাত্র এক লাখ ৬৯ হাজার।
সামরিক ভাণ্ডারে যুদ্ধযানের সংখ্যায় চীন ও তাইওয়ানের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। চীনের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ট্যাংকের বিপরীতে তাইওয়ানের আছে মাত্র সাড়ে ছয়শ। চীনের যুদ্ধ বিমান ৩ হাজারের বেশি, তাইওয়ানের ৫০৪টি। সাবমেরিন, যুদ্ধ জাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যায়ও দুই দেশের পার্থক্য স্পষ্ট।
এদিকে বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর একটি চীন। তাদের ভাণ্ডারে রয়েছে ২৮০টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড। এদিকে তাইওয়ানের কাছে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র নেই। তবে মুখোমুখি যুদ্ধ বেধে গেলে নিশ্চিতভাবেই তাইওয়ানের পক্ষে অবস্থান নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: দ্যা মিলিটারি ব্যালেন্স
Leave a reply