আয়ারল্যান্ড সিরিজ জিততে শেষ ওয়ানডেতে জয়ের বিকল্প ছিল না টাইগারদের। হারের শঙ্কা জাগিয়েও জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছেড়েছে তামিম ইকবালের দল। শেষ ওভারে আইরিশদের দরকার ছিল ১০ রান। ঠান্ডা মাথায় বল করে হাসান মাহমুদ শেষ ভেল্কিটা দেখান। প্রথম ৫ বলে মাত্র ৪ রান দিয়ে তরুণ এই পেসার তুলে নেন ২টি উইকেট।
শেষ বলে আয়ারল্যান্ডের দরকার ছক্কা। স্টেডিয়ামে তখন পিনপতন নীরবতা। হাসান দেন দুর্দান্ত এক ইয়র্কার। বল গিয়ে সরাসরি আঘাত করে উইল ইয়ংয়ের প্যাডে। রান হয়নি। ততক্ষণে উল্লাসে ফেটে পড়েছে গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশি সমর্থকরা। উল্লাস বাংলাদেশ শিবিরে। ৫ রানের এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিলো বাংলাদেশ।
এর আগে, ২৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে স্টিফেন ডোহেনিকে হারিয়ে স্টার্লিং ও বালবির্নি ভালোই এগিয়ে নিতে থাকে আয়ারল্যান্ডকে। ১০৯ রানের জুটি গড়ে এবাদত হোসেনের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন বালবির্নি। ৭৮ বলে ৫৩ রান করেন এই ব্যাটার। পরে ক্রিজে দীর্ঘক্ষণ থাকতে পারেননি স্টার্লিং। মেহেদী মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি ৭৩ বলে ৬০ রান করেন।
এরপর টাকারের সাথে জুটি গড়েন গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা টেক্টর। দুজনের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটে মনে হতে থাকে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতছাড়া হতে চলেছে। কিন্তু শান্তর বলে লিটন দাসের দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন টেক্টর। ৪৮ বলে ৪৫ রান করে আউট হন তিনি। পরে মোস্তাফিজের বলে ৫৩ বলে ৫০ রান করে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন টাকার। আর বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং হাসান মাহমুদ নিয়েছেন ২ উইকেট।
এর আগে, তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে তামিম ইকবালের দারুণ শুরুর পরও ৭ বল বাকি থাকতে ২৭৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। তামিমের ৬৫ রানের পর মুশফিকের ৪৫ রানে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখলেও আর কেউ বলার মতো স্কোর করতে না পারায় ২৭৪ রানে থামতে হয় সফররতদের।
প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাবার পর ২য় ম্যাচে দারুণ জয় নিয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় টাইগাররা। তাই সিরিজ বাঁচাতে আয়ারল্যান্ডের সামনে জয়ের বিকল্প ছিল না। সেই পরিকল্পনায় টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নে।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে ভুল হতে দেননি মার্ক অ্যাডায়ার। রনি তালুকদারকে উইকেটরক্ষকের হাতে তালুবন্দী করেন এই পেসার। ২য় উইকেটে শান্তকে নিয়ে ৪৯ রানের জুটি গড়ে সেই ধকল সামাল দেন অধিনায়ক তামিম। ৩২ বলে ৩৫ রান করে যখন নাজমুল শান্ত আউট হন তখন দলের রান ৬৭।
৩য় উইকেটে লিটন দাসের সাথে আরও একটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়েন টাইগার অধিনায়ক। তবে ৭০ রানের সেই জুটি ভাঙে লিটন ম্যাকব্রিনের বলে ৩৫ রান করে অ্যাডায়ারের হাতে ধরা পড়লে। আর ভালো শুরুর আভাস দিয়ে তৌহিদ হৃদয় মাত্র ১৩ রান করে আউট হলে ১৫৯ রানে ৪র্থ উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের।
দলীয় ১৮৬ রানে ৫ম টাইগার ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক তামিম। কিন্তু আউট হবার আগে ক্যারিয়ারের ৫৬তম অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। ৮২ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৯ রান।
৬ষ্ঠ উইকেটে মেহেদী মিরাজকে সাথে নিয়ে দলের বড় সংগ্রহের জন্য লড়াই শুরু করেন মুশফিকুর রহিম। ৭৫ রানের এই জুটি ভাঙে মুশফিক ম্যাকব্রিনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পা দিলে। ৫৪ বলে ৪৫ রান করা মুশফিক হাঁকিয়েছেন ৩টি চার আর ১টি ছয়।
এরপরই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। মুশফিক আউট হবার ৩ রানের মধ্যে ৩৭ রান করা মিরাজ আউট হলে আর কেউ বলার মত কোনো রান করতে পারেননি। মাত্র ১৩ রানে শেষ ৫ উইকেটের পতন হলে ২৭৪ রানে গুঁটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে মার্ক অ্যাডায়ার নিয়েছেন ৪ উইকেট। দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনে আর জর্জ ডকরেল।
/এনএএস/এমএন
Leave a reply