মাটির প্রায় ১০০ মিটার গভীরে সুরক্ষিত পরমাণু প্রকল্প তৈরি করছে ইরান

|

মাটির প্রায় ১০০ মিটার গভীরে সুরক্ষিত পরমাণু প্রকল্প তৈরি করছে ইরান। স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ভিডিও এবং ছবি যাচাই বাছাই করে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা প্ল্যানেট ল্যাবস। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

প্ল্যানেট ল্যাবাসের ধারণা, প্রকল্পটিতে সেন্ট্রিফিউজের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মজুদ রাখার সুযোগও রয়েছে। পশ্চিমা হামলা ও গোয়েন্দা নজরদারি এড়াতেই ভূপৃষ্ঠের এতো নিচে এই প্রকল্প করা হয়েছে।

ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ ইস্পাহানের নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্র। দেশটির পরমাণু কর্মসূচির কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই প্রকল্পকে। বিদ্যুৎ তৈরির পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্র বানাতে সক্ষম সেন্ট্রিফিউজ তৈরি হয় এই কেন্দ্রেই। সম্প্রতি এই কেন্দ্রের পাশেই নতুন আরেকটি ভূগর্ভস্থ পরমাণু প্রকল্প থাকার প্রমাণ পেয়েছে গবেষণা সংস্থা প্ল্যানেট ল্যাবস।

স্যাটেলাইটের ছবি এবং ভিডিও গবেষণার পর প্রতিষ্ঠানটি বলছে, জাগরোজ পর্বতমালায় মাটির প্রায় ১০০ মিটার গভীরে তৈরি হয়েছে মূল প্রকল্পটি। এতো গভীরে হামলা চালানোর সক্ষমতা নেই পৃথিবীর কোনো অস্ত্রেরই। প্ল্যানেট ল্যাবসের ধারণা, সেন্ট্রিফিউজের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি অস্ত্র মজুদের ব্যবস্থাও রয়েছে এই প্রকল্পে।

পরমাণু অস্ত্র চুক্তি বিষয়ক গবেষক স্টিভেন ফুয়েন্তে জানান, নতুন এই প্রকল্পের ২টি প্রবেশপথ রয়েছে। প্রবেশপথ এবং আশেপাশের অবকাঠামো দেখে যা বোঝা যাচ্ছে তা হলো মাটির প্রায় ১০০ মিটার গভীরে অবস্থিত প্রকল্পটি। সেখানে প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি গণবিধ্বংসী সব অস্ত্র রাখা থাকতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার অন্যতম লক্ষ্য ইরানের পরমাণু প্রকল্প এবং এর সাথে সংশ্লিষ্টরা। এখন পর্যন্ত মোসাদের হামলায় নিহত হয়েছেন ৬ জন পরমাণু বিজ্ঞানী। এর পাশাপাশি নওরোজ এবং ফোর্দো পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পে একাধিকবার নাশকতাও চালানো হয়। ২০২০ সালে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ড হয় নাতাঞ্জেও।

আগে থেকেই দুটি ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্র রয়েছে ইরানের। বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমা হামলা ও গোয়েন্দাদের নাশকতা এড়াতে নতুন কেন্দ্রটিকে আরও গভীর ও দুর্গম করেছে ইরান।

স্টিভেন ফুয়েন্তে আরও বলেন, ফোর্দো এবং পার্চিনের চেয়েও এটি অনেক বেশি গভীরে অবস্থিত এবং অনেক বেশি সুরক্ষিত। ইরান আগেই জানিয়েছিল তারা তাদের সেন্ট্রিফিউজগুলোকে সরিয়ে নেবে। যে বিশাল এলাকাজুড়ে তারা ফ্যাসিলিটি তৈরি করেছে তাতে এটা উদ্বেগের বিষয় যে তারা শিগগিরই আবারও পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প চালু করবে।

ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা ঠেকাতে কয়েক দশক ধরেই তৎপর পশ্চিমা বিশ্ব। যদিও তেহরান শুরু থেকেই বলছে, তাদের কর্মসূচি পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য। স্যাটেলাইটে ধরা পড়া নতুন কেন্দ্রে পশ্চিমাদের চোখকে ফাঁকি দিয়েই ইরান পরমাণু অস্ত্র বানিয়ে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকরা।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply