খেরসনে বাঁধে বিস্ফোরণ; পাল্টাপাল্টি দোষারোপের খেলায় মেতেছে মস্কো-কিয়েভ

|

ডুবে গেছে খেরসন।

খেরসনের নোভা কাখোভকা বাঁধে হওয়া বিস্ফোরণের পর রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ।প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির হুমকি, বেসামরিক অবকাঠামোয় হামলা চালিয়ে ইউক্রেনীয় সেনাবহরকে ঠেকানো যাবে না। যেকোনো মূল্যে নিজেদের ভূখণ্ড উদ্ধার করা হবে। আর রাশিয়ার অভিযোগ, স্যাবোটাজ চালিয়ে পরাজয় এড়াতে চাইছে ইউক্রেন। এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, যেকোনো পক্ষই নিজ স্বার্থ উদ্ধারে ধ্বংস করতে পারে এ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। খবর আলজাজিরার।

নোভা কাখোভকা বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় প্লাবিত হয়েছে খেরসনের বড় একটা অংশ। খোদ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টই বলছেন, পানিতে ভেসে যেতে পারে অন্তত ৮০টি জনপদ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৪০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর তাগিদও দেন তিনি। তার অভিযোগ, কোনো কারণ ছাড়াই বেপরোয়া রুশ আগ্রাসনের শিকার হয়েছে খেরসনবাসী।

জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবেই কাখোভকা বাঁধে হামলা চালিয়েছে। এ জলাধার থেকেই ক্রাইমিয়ায় পানি সরবরাহ করা হয়। রুশ দখলদাররা বুঝতে পারছে যে, এবার ক্রাইমিয়া থেকে পালানোর সময় হয়েছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্পর্শকাতর অবকাঠামোয় হামলা চালিয়েও সামরিক পরিকল্পনা থেকে আমাদেরকে হঠানো যাবে না। হাতছাড়া হওয়া প্রত্যেকটি অঞ্চল পুনরুদ্ধার করবে ইউক্রেন।

এদিকে পুতিন প্রশাসন বলছে, স্যাবোটাজ চালিয়ে, ফ্রন্টলাইনের পরাজয় গোপন করতে চায় ইউক্রেন।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, আরও একবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটালো কিয়েভ প্রশাসন। রাতারাতি, কাখোভকা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দিলো তারা। তাদের পরিকল্পনা জলের মতো পরিষ্কার। রুশ সীমান্তে বারবারই ব্যর্থ হচ্ছে ইউক্রেনের অভিযান। যা, ধামাচাপা দিতেই তারা পুরো বিশ্বের নজর সরালো খেরসনের দিকে। নতুবা, অর্থ-অস্ত্র সহযোগিতা দেয়া পশ্চিমাদের কাছে কী সাফাই দেবে কিয়েভ প্রশাসন?

তবে এখনি কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। কারণ, কোনো পক্ষের দাবি-দাওয়ার নেই শক্ত কোনো ভিত্তি। অনেকেই বলছেন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগের খেলায় মেতেছে মস্কো-কিয়েভ।

লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষক ড. মেরিনা মিরন এ প্রসঙ্গে বলেন, ইউক্রেনের সামরিক অগ্রযাত্রা রুখে দেয়াই রাশিয়ার উদ্দেশ্য। সেক্ষেত্রে , খেরসনের বাঁধ ধসিয়ে অমানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার বিকল্প নেই। সেনাবাহিনী উদ্ধার তৎপরতার দিকে মনোযোগী হলে, অন্যান্য ফ্রন্টলাইনে হামলা চালানো সহজ হবে। আর যদি ইউক্রেন বাঁধে বিস্ফোরণ ঘটায়; তাহলে সেটা হবে পশ্চিমাদের চোখে ধূলো দেয়া। কারণ, তারা বেশকিছু অভিযানে পরাস্ত হয়েছে। তাই, আন্তর্জাতিক মহলের নজর হঠাতেই এ কারসাজি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৬ জুন) নিপ্রো নদীর নোভা কাখোভকা বাঁধে ঘটে জোরালো বিস্ফোরণ। যাতে, ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের অবকাঠামোটি গুড়িয়ে যায়। বাঁধের পানিতে প্লাবিত হয় অন্তত ২৩টি লোকালয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে যে চারটি অঞ্চল গণভোটের মাধ্যমে নিজের বলে দাবি করেছিলো রাশিয়া; খেরসন তার অন্যতম। তাই, কে বা কারা এ হামলা চালিয়েছে; সেটি ঘিরে রয়েছে ধোঁয়াশা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply