এখনও নিখোঁজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সেই সাবমারসিবল

|

ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবি।

এখনও সন্ধান মেলেনি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া পর্যটকবাহী সাবমারসিবল টাইটানের। পাঁচ আরোহী নিয়ে কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জোনস উপকূল থেকে রওনা হয়েছিল সাবমারসিবলটি। সাগরের গভীরে ডুব দেয়ার পৌনে দুই ঘণ্টার কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমারসিবলটির। এরইমধ্যে, উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ, সেনা ও বিমানবাহিনী। খবর সিএনএনের।

সোমবার (১৯ জুন) কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশের সেন্ট জোনস থেকে যাত্রা শুরু করেছিল টাইটান। সেখান থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিকের ১২শ’ ফুট গভীরে রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। এ সফরের দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিলো ৮ দিন। পানির ওপর থেকে ‘পোলার প্রিন্স’ নামে একটি জাহাজ যোগাযোগ রাখছিল ডুবোযানটির সাথে। তবে সাগরে ডুব দেয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর থেকেই সাবমারসিবলটির সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে পোলার প্রিন্স।

এরইমধ্যে ডুবোযানটির খোঁজে আটলান্টিকের গভীরে চলছে তল্লাশি। সাগরের ৯শ’ মাইল এলাকাজুড়ে চলছে অনুসন্ধান। একযোগে অভিযানে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। সবচেয়ে বড় আশঙ্কা, প্রতি মুহূর্তে ফুরিয়ে আসছে অক্সিজেন। জরুরি অবস্থায় ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে ডুবোযানটিতে। এ সময়ের মধ্যেই উদ্ধার করতে হবে জলযানটিকে।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন কোস্টগার্ডের ফার্স্ট ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মগার বলেন, ডুবোযান শনাক্তে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। অক্সিজেন সরবরাহ থাকতে থাকতেই সাবমারসিবলটিকে উদ্ধার করতে হবে। জায়গাটি অনেক দূরে বলে অভিযানও বেশ কষ্টকর। প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগানো হচ্ছে।

জানা গেছে, টাইটান নামের এ সাবমারসিবলটি তৈরি করেছে ওশেনগেট এক্সপিডিশনস নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। টাইতানের ওজন ১০ হাজার ৪৩২ কেজি। এটি পানির নিচে ১৩ হাজার ১০০ ফুট গভীরে পর্যন্ত যেতে পারে। এতে আটদিন ভ্রমণের জন্য প্রতিটি টিকিটের দাম ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

টাইটানের আরোহীদের মধ্যে আছেন ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হারডিং, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহাজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান এবং ওশেনগেট’র প্রধান নির্বাহী স্টকটোন রুশ। অপরজন ফরাসি নাবিক পল হেনরি। উন্নত প্রযুক্তির এ ডুবোযানটিতে এখনও নিরাপদে আছেন যাত্রীরা, এমনটিই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ ল্যারি ড্যালে বলেন, সাবমারসিবল জাতীয় যানের প্রযুক্তি এখন অনেক উন্নত। তাই আমি আশাবাদী। আমি নিজেও একবার সাবমেরিনে ১২ ঘণ্টা পানির নিচে ছিলাম। অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক ছিল বলে সমস্যা হয়নি।

প্রসঙ্গত, ১৯১২ সালে ২ হাজার ২শ’ যাত্রী নিয়ে আটলান্টিকে ডুবেছিল তৎকালীন সবচেয়ে বৃহত্তম জাহাজ টাইটানিক। মৃত্যু হয়েছিল ১৫শ’ আরোহীর। ১৯৮৫ সালে আবিষ্কার হয় জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ। এরপর থেকেই গবেষক ও কৌতূহলী অভিযাত্রীদের আগ্রহের কেন্দ্র টাইটানিকের ভগ্নস্তূপ।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply