রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনীর সঙ্গে রুশ বাহিনী ব্যাপক লড়াই চলছে। ভাড়াটে সেনাদের অবস্থানের ওপর একের পর এক বিমান হামলা চালায় রুশ বাহিনী। পাল্টা হামলায় ৩টি রুশ হেলিকপ্টার ধ্বংসের দাবি করেছে ওয়াগনার। ভাড়াটে দলটি বিদ্রোহ ঘোষণা করলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, পিঠে ছুরি চালিয়েছে ওয়াগনার। খবর রয়টার্স ও এপির।
এদিকে, ওয়াগনার গ্রুপ বিদ্রোহ ঘোষণার পর থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হয় রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে। শনিবার ভোর থেকেই সীমান্ত অঞ্চল রোস্তভ এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলোয় টহল দেয়া শুরু করে ওয়াগনারের সদস্যরা। অবস্থান নেয় স্কয়ার এরিয়াসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয়। এর কিছুক্ষণ পরই দখলে নেয় রোস্তভে অবস্থিত রুশ সামরিক দফতর। ফলে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে রুশ বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড।
এরপরই মস্কো অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার ঘোষণা দেন ওয়াগনারের প্রধান প্রিগোঝিন। ভরোনেঝ ও লিপ্টেস্ক শহরেও অগ্রসর হয় মার্সেনারিরা। হামলায় ৩টি রুশ হেলিকপ্টার ধ্বংসের দাবিও জানানো হয়।
এর আগে, ওয়াগনার প্রধান দাবি করেন, তাদের দুই হাজার সেনাকে হত্যা করেছে রুশ সেনারা। তারই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিদ্রোহ।
ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন বলেন, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। এটা বলে দিতে চাই, আমাদের সামনে যে বা যারাই বাধা হবে, তাদের আমরা নিশ্চিহ্ন করে দেবো। কেউ আমাদের ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
পুতিন প্রশাসনও সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। রোস্তভে বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মস্কো যাওয়ার হাইওয়ে। ফলে রোস্তভেই আপাতত ঘাঁটি গেড়েছে ওয়াগনার গ্রুপ। রাজধানী মস্কোসহ বিভিন্ন শহরে ব্যাপক জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সরকারি ভবন, বাস, রেলস্টেশনগুলোসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় টহল দিচ্ছে সেনা সদস্যরা।
রুশ সেনাবহিনীর ডেপুটি জেনারেল স্টাফ লে. জেনারেল ভ্লামিদির আলেক্সিভ বলেন, এই সামরিক অভ্যুত্থান রাশিয়া এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে বেঈমানি। দেশের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপের পরিণতি হবে ভয়াবহ। যদি প্রিগোঝিন আত্মসমর্পণ করে তাহলে আমরা কঠোর হবো না। নইলে এমন পরিণতি বরণ করতে হবে তাকে, যা সে কল্পনাও করেনি।
এ অবস্থায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বিদ্রোহ দমাতে সর্বাত্মক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওয়াগনার বাহিনীকে বেঈমান আখ্যা দেন তিনি।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, এ ধরনের বিদ্রোহের অর্থই হলো মাতৃভূমির বিরুদ্ধ যাওয়া। ওয়াগনারকে অস্ত্র দেয়া হয়েছে রাশিয়াকে রক্ষার জন্য। কিন্তু গোষ্ঠীটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে গেছে। তাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এই বিদ্রোহ দমন করা। এরইমধ্যে অভিযান শুরুর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না শত্রুদের।
এদিকে, সেন্ট পিটার্সবার্গে ওয়াগনার গ্রুপের সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছে রুশ সামরিক বাহিনী।
/এমএন
Leave a reply