ফ্রান্সের নজিরবিহীন দাঙ্গা-সহিংসতার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিও গেমসকে দায়ী করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন। শুক্রবার (৩০ জুন) জরুরি এক বৈঠক শেষে তিনি জানান, বিক্ষোভকারীদের বেশিভাগের বয়স ১৪-১৮ এর মধ্যে। ইন্টারনেট গেমসের সহিংস কর্মকাণ্ডকে বাস্তবতা বলে মনে করছে তারা। এজন্য, কিশোরদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। অপ্রাপ্ত বয়সীদের এমন সহিংস আচরণকে চরম উদ্বেগজনক বলছে ম্যাকরন প্রশাসন। খবর এপির।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
ফ্রান্সের যেকোনো বড় শহরের রাস্তাগুলোকে এখন দেখলে মনে হবে যেন এটি কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদ। গত মঙ্গলবার পুলিশের গুলিতে আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত কিশোর নাহেল হত্যাকাণ্ডের জেরে ছড়ানো বিক্ষোভে এমনই সহিংসতা চালাচ্ছে বিক্ষুব্ধ ফরাসিরা। দিনে পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত থাকলেও, সন্ধ্যা নামার পরপরই অচেনা হয়ে উঠছে শহরগুলো। রাস্তায় নেমে রীতিমত তাণ্ডব চালাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। বেশ কিছু শহরে কারফিউ জারি করেও লাগাম টানা যাচ্ছে না পরিস্থিতির। সহিংস দাঙ্গায় এরইমধ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সম্পদের। ফ্রেঞ্চ গণমাধ্যমগুলোর দাবি, গত তিন রাতে ২০০০ গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। রিপোর্ট হয়েছে প্রায় ৪ হাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। আর, বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৫শ ভবন।
ম্যাকরন প্রশাসন বলছে, বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের বড় অংশই কিশোর। যাদের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। এই বয়সী কিশোর ও তরুণদের সহিংস আচরণে উদ্বিগ্ন ফরাসি সরকার। প্রেসিডেন্টের দাবি- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ভিডিও গেমসই তাদের এমন আগ্রাসী করে তুলেছে। প্রভাবিত করছে তাদের আচরণ।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ফ্রান্সে যা ঘটছে তার পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গ্রেফতারকৃতদের এক তৃতীয়াংশই কিশোর। স্ন্যাপচ্যাট, টিকটকসহ বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তাদের সংগঠিত হতে সহায়তা করছে। মূলত, নেট দুনিয়ায় তারা যা দেখছে তারই অন্ধ অনুকরণ করছে। বাস্তবতার সাথে তফাৎ বুঝতে পারছে না। দেখে মনে হচ্ছে, যেসব ভিডিও গেমস তাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে সেগুলোই তারা রাস্তায় রিক্রিয়েট করার চেষ্টা করছে।
এদিকে, আসন্ন দিনগুলোতে ফ্রান্সের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
ফ্রান্সের নিরাপত্তা এবং সংকট ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ লুইস বারনার্ড এ প্রসঙ্গে বলেন, এর আগেও আমরা অনেক বিক্ষোভ দেখেছি। কিন্তু এই বিক্ষোভটা ভয়াবহ। সবচেয়ে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, খুব দ্রুত গতিতে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতি রাতে সহিংসতার মাত্রা বেড়েই চলেছে।
উল্লেখ্য, ভয়াবহ এ দাঙ্গা রুখতে ছেলেমেয়েদের ঘরে রাখতে বাবা-মায়েদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
/এসএইচ
Leave a reply