ফিলিস্তিনিদের হাত থেকে আত্মরক্ষার অজুহাতে ঘরে ঘরে অস্ত্র জড়ো করছে সাধারণ ইসরায়েলিরা। ব্যক্তিগত অস্ত্র কেনার রীতিমতো হিড়িক পড়েছে দেশটিতে। ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিদের চোরাগোপ্তা হামলা থেকে সুরক্ষার প্রয়োজনকে এর কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে অস্ত্র কিনতে উৎসাহিত করছে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও। এতে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও শঙ্কিত ফিলিস্তিনিরা। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর আফুলায় অস্ত্রের দোকানে প্রতিদিনই বাড়ছে বেচাকেনার পরিমাণ। সাধারণ নাগরিকরাই কিনছেন এসব অস্ত্র। অস্ত্র বিক্রির সাথে সাথে এখানেই দেয়া হয় তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ।
এক অস্ত্রের দোকানের মালিক বলেন, কখন এটা ব্যবহার করা যাবে আর কখন নিষিদ্ধ, তা জানতে হবে। এখানে থিওরিটিক্যাল ক্লাসে শেখানো হয় বিষয়গুলো। আপনি এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ। অপ্রোয়জনীয় ফায়ারিং এড়াতে হবে।
গেলো এক-দেড় বছর ধরে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বাহিনীর আগ্রাসন বেড়ে চলায় কয়েকবার ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিদের চোরাগোপ্তা হামলার শিকার হয়েছে ইসরায়েলিরা। ছুরি বা বড়জোর নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে কেড়ে নেয়া অস্ত্রই থাকে ফিলিস্তিনিদের সম্বল। খুব বেশি হতাহতের খবরও মেলে না এসব হামলায়। এরপরও তাদের হাত থেকে বাঁচতে আত্মসুরক্ষার পথ খুঁজছে ইসরায়েলিরা।
একজন অস্ত্রের ক্রেতা জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর বিকল্প হতে নয়, বরং পুলিশ পৌঁছানো পর্যন্ত আত্মসুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আর সেজন্যই দরকার ব্যক্তিগত অস্ত্র।
গতবছর ব্যক্তিগত অস্ত্র ক্রয়ের জন্য ২০২১ সালে ১৯ হাজার আবেদন পড়েছিল ইসরায়েলে। আবেদনের সংখ্যা গত বছর এক লাফে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ হাজারে। আর এতে উসকানি রয়েছে খোদ ইসরায়েল সরকারের। অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করার অঙ্গীকার করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতেমার বেন গাভির। মাসিক অনুমোদনের সংখ্যা ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার করা হবে বলে জানান তিনি।
এরই মধ্যে দেড় লাখের বেশি সাধারণ ইসরায়েলির হাতে আছে ব্যক্তিগত অস্ত্র। পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর তা ব্যবহার করতেও দেখা যায়।
চলতি বছর ২৫ জনের মতো ইসরায়েলির মৃত্যু হয়েছে ফিলিস্তিনিদের হামলায়। যেখানে ইহুদি বাহিনীর অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা প্রায় ২০০।
এসজেড/
Leave a reply