এক যুগের বেশি সময় চেষ্টার পর ভয়াবহ এক সিরিয়াল কিলারকে আটক করলো নিউইয়র্ক পুলিশ। এগারোটি খুনের পরও ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল স্থপতির আড়ালে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর ওই খুনী। তার মূল টার্গেট ছিল যৌনকর্মীরা। কোনো রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার মুভিকেও হার মানায় রেক্স হিউয়েরমান নামের ওই ব্যক্তির অপরাধের কাহিনী। খবর সিএনএন এর।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে আটক হন ওই ব্যক্তি। মোট ৯ জন নারী, এক পুরুষ ও একটি শিশু হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
ঘটনার শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। ২০১০-১১ সালের মধ্যে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের সমুদ্রতীরে মেলে একের পর এক মরদেহ। কোনোটি বস্তা বন্দি, কোনোটি ঝোঁপের নিচে। একপর্যায়ে জাতীয়ভাবে আলোচনায় আসে মৃত্যুর খবরগুলো। ধারণা করা হচ্ছিল, ঘটনাগুলোর পেছনে দায়ী একই ব্যক্তি। তবে কোনো সূত্রই মিলছিল না হত্যাকারী সম্পর্কে।
এক যুগের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর অমীমাংসিত রহস্যের জট খুললো নিউইয়র্ক পুলিশ। শনাক্ত হলো স্থপতির আড়ালে থাকা ভয়ঙ্কর এক খুনী। এই সিরিয়াল কিলারকে ৫৯ বছর বয়সী রেক্স হিউয়েরমান হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ১১টি হত্যাকাণ্ডের পরও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন বছরের পর বছর। পুলিশের নাকের ডগায় থাকলেও এতদিন নজরেই আসেননি তিনি।
এ নিয়ে পুলিশ কমিশনার রডনি হ্যারিসন বলেন, রেক্স হিউয়েরমান একজন দানব, যিনি আমাদের মাঝেই চলাফেরা করতেন। একেকটি পরিবার ধ্বংসকারী এক শিকারী তিনি। এই নারীরা ২০০৭ এর জুলাই থেকে ২০১০ এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিখোঁজ হন। ১৩ বছরে কোনো সূত্রই মেলেনি এ খুনের। জানতাম, খুনি আমাদের তদন্তের দিকে নজর রাখছে। তাই খুব গোপনে এই তদন্ত পরিচালনা করি।
এ বিষয়ে আইনজীবী জন রে বলেন, আজ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছি। ১২ বছর ধরে এই মামলায় তদন্তের পর এখন নিজেকে হালকা মনে হচ্ছে। নিহতদের পরিবারগুলোর জন্যও স্বস্তির কারণ এটি। অবশেষে অপরাধীকে আটক করা হলো।
মূলত একটি পিকআপ ভ্যানের সূত্র ধরে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় আসেন রেক্স। ম্যানহাটনে তার খেয়ে ফেলে রাখা একটি পিৎজার বাক্স সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করে পুলিশ। সেই পরীক্ষার ফল মৃত এক নারীর দেহাবশেষ থেকে পাওয়া আলামতের সাথে মিলে যায়। আরও কিছু সূত্র মিলে যাওয়ার পর আরও নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা।
তবে রেক্স হিউরমানের আইনজীবী মাইকেল ব্রাউন বলেন, এখনই বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। এতটুকু কেবল জানাতে পারি যে, আমার ক্লায়েন্ট বলেছেন, তিনি এসব ঘটনায় জড়িত নন। এটা কেবল মামলার শুরু। এখনও তথ্য প্রমাণ নেই।
/এসজেড
Leave a reply